পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গর হত। । মুখপানে চাহিয়া রহিলেন। এইরূপ নিৰ্বাক্‌-অভিনয়ন্তে কিঞ্চিৎ মৃদুস্বরে রত্নেশ্বর জিজ্ঞাসা করিলেন, “কুঞ্জবিহারীর অধিকারে তবে কি তুমি সন্তুষ্ট নও?” • বিকসিত-নেত্ৰে চাহিয়া রঙ্গিণী বলিলেন, “তুমি আমার কথার অর্থ বুঝতে পার নাই। কুঞ্জবিহারীর অধিকার নহে, আমার অধিকার। কুঞ্জবিহারী আমাকে স্বাধীনতা দিয়া রাখিয়াছে, সেই মৰ্যাদাতেই আমি এখানে আছি ; স্বাধীনতা যদি না থাকিত, তাহা হইলে এতদিন কবে শিকলি কাটিয়া উড়িয়া যাইতাম ।” মৃদুহাম্ভ করিয়া রত্নেশ্বর বলিলেন, “বাহবা বাহবা ! নবরঙ্গিণী বিহঙ্গিনি । সত্যই কি তবে তুমি উড়িয়া যাইতে জান ?” রঙ্গিণী বলিলেন, “কোন বিহঙ্গিনী উড়িতে না জানে ? আকাশ আমাদের প্ৰশস্ত ক্ষেত্র, আকাশপথে উড়িতে কেহই বাধা দেয় না, বাধা দিতে পারেও না ; ইহা কি তুমি বুঝিতে পারিতেছি না ?” রত্নেশ্বর বলিলেন, “এইমাত্র ভূমি বলিয়াছ, তোমার (প্রমরাজ্য আছে ; ংসারে প্রেমরাজ্য বড় ভারী ; সে রাজ্য লইয়া একাকিনী কি প্রকারে আকাশপথে উল্কিবে ?” রঙ্গিণী বলিলেন, “আকাশপথেও দণ্ডধর পাওয়া যায়, সেই দণ্ডধর আমার সহায় হইতে পারবে।” । 唱 * অবসর বুৰিয়া রত্নেশ্বর বলিলেন, “আমি যদি তোমার প্রেমরাজ্য আমার কৰিয়া লই, তাহা হইলে কি আমাকে সঙ্গে লইয়া তুমি উড়িতে পার ?” স্বদিশী চমকিয়া উঠিলেন ; বিস্কারিত-নয়নে রত্নেশ্বরের নয়ন নিরীক্ষণ করিয়া কিছুৎক্ষণ চুপ করিয়া রহিলেন। তঁহার মৌনতাব দর্শন করিয়া রত্নেশ্বর জিজ্ঞাসা করিলেন, “অবাক হইয়া রহিলে যে ? আমি তোমার প্ৰেমরাজ্যের বাহন, এ কথা কি তোমার মনঃপূত হইল না ?” । চক্ষু নাচাইয়া, স্বর কঁপাইয়া রঙ্গিণী উত্তর করিলেন, “দুটা ভার বহন করা একজনের পক্ষে সম্ভব হইতে পারে, এমন আমি বুঝি না। তুমি বলিয়াছ, তোমার, একটী প্রেমরাজ্য আছে, সে রাজ্যের চালক, পালক, বাহক তুমি । তাহার উপর আর একটা রাজ্য চাপাইয়া দলে তুমি অশক্ত হইয়া পড়িৰে, হাটী রাজ্যই লণ্ডভণ্ড হইবে, তোমার কথা শুনিয়া আমার সেই ভয় হইতেছে।”