পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম তরঙ্গ । '30s গাষ্ঠীরবচনে রত্নেশ্বর কছিলেন, “রঙ্গিণি ! আপনার কথায় তুমি আপনিই । ধড়া পড়িতেছ। একটু পূর্বে আমাকেই তুমি বলিয়াছিলে, তোমার কথার অর্থ আমি বুঝতে পারি নাই ; আমি এখন তোমাকেও বলিতেছি, তুমি আমার কথা বুঝিতে পার নাই। আমার প্রেমরাজ্য আমার বক্ষোমূলে স্থাপিত, আমিই সে রাজ্যের অধিকারী, আমার রাজ্যের অংশী কেহই নাই। তুমি বলিয়াছ, কুঞ্জবিহারীর অধিকার কিছুই নয়, সমস্তই তোমার নিজের অধিকার ; সে অধিকারের আর একটী অধিকারী তুমি কি মনোনীত করিয়া লইতে ইচ্ছা রাখ না ?” তঁহাদের এই সকল কথা যখন হইতেছিল, কুঞ্জবিতারী তখন গৃহে ছিলেন না, তিনি সেখানকার আদালতের একজন উকীল, আদালতের কাৰ্য সমাপ্ত করিয়া । তিনি তঁহার একজন মক্কেলের বাড়ীতে নিমন্ত্রণ রাখিতে গিয়াছিলেন ; রঙ্গিণীয় কাছে মনের কথা প্ৰকাশ করিবার উত্তম সুযোগ প্ৰাপ্ত হইয়া রত্নেশ্বর অবাধে এই প্রশ্ন উত্থাপন করিলেন। প্রশ্ন শ্রবণ করিয়া সুচতুরা নবরঙ্গিলী আর কিছু শুনিবার জন্য একটু হাস্ত করিয়া বলিলেন, “স্পষ্ট করিয়া বল। সকল কথায় হেঁয়, লী রাখিলে মুখ স্ত্রীজাতির বুঝিবার বড় কষ্ট হয়।” : সুচতুরা রঙ্গিণী রত্নেশ্বরের কথাগুলি বেশ বুঝিতে পারিয়াছিলেন, রত্নেশ্বর তাহা বুঝয়াণ্ড একটু থামিয়া থামিয়া বলিলেন, “তোমাতে আমাতে কথা, তুমি স্বাধীন, আমি স্বাধীন, এ ক্ষেত্রে হেঁয়ালী রাখিবার কোন হেতু উপস্থিত নাই ; একটী কথাতেও আমি হেঁয়ালী রাখিতেছি না, তোমার প্ৰেমরাজ্যের অধিকারিণী । তুমি, তোমার মনের ভাব আমি বুঝিয়াছি; তাই বলিতেছি, তুমি যদি আমার প্রেমরাজ্যের ভার লংঘব করিয়া দাও, তাঁহা হইলে আমি তোমাৰেই সেই রাজ্যের অধিকারী করিয়া রাখিব, কুঞ্জবিহারীকে তুমি ভালবাস না, তোমার প্রত্যেক কথার ভাৰে তাহা আমি বুঝতে পারিয়াছি। সংসারে রমণীজাতি পবিত্র ভালবাসার আধার, সে ভালবাসা যাহারা প্ৰাপ্ত হয়, তাহারা ধন্য, তাহারা । ভাগ্যবান, সেই কারণে আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছি, সমস্তই তোমার। নিজের অধিকার ; সে অধিকারে আর একটী অধিকারী মনোনীত কািরয়া। লাইতে তুমি কি ইচ্ছা রাখ না ?” : কুঞ্জবিহাটী একজন উকীল, তাহার দশ টাকা রোজগার আছে, তথাপি রঙ্গিণীর গহনা গুলির উপর আক্রমণ করিতেছিলেন। রত্নেশ্বরধাৰু কুঞ্জবিহাৰীয়