পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

i 而弯兹领 বিবাহ-বাজারে আগুন লাগাতে আজকাল বোধ হয়, সেই প্ৰকার নিন্দাকারী লোকেরা পরম সন্তুষ্ট হইয়াছে ; কারণ, অনেক কুলীন সন্তান এখন কৌলীন্যমৰ্য্যাদা অগ্ৰাহ্য করিয়া স্বচ্ছন্দে অমানবদনে আঘরে কন্যাদান করিতেছেন, কন্যা নানাপ্রকার স্বর্ণালঙ্কার পরিধান করিবে, চিরকাল সুখে থাকিবে, বহুমুদ্রা মূল্য দিয়া বর কিনিতে হইবে না, এই সুবিধার জন্যই কুলীনের কন্য। আজকাল অঘরে পড়িতেছে। প্রায়ই এইরূপ আমরা দর্শন করিতেছি। পূর্বে এ দেশে ভদ্র ভদ্র শ্রেণীর মধ্যেও কন্যা-বিক্রয়-প্ৰথা প্ৰচলিত ছিল, আজও স্থানে স্থানে আছে, কিন্তু পূর্বের সহিত তুলনা করিলে এখন অনেক কমিয়া গিয়াছে, ইহা স্পষ্টই দেখা যায়। যাহার কন্যা বিক্রয় করি ত, ভদ্র লোকেরা তাহাদিগকে ঘৃণা করিত, এমন কি, মৰ্যদাবান সামাজিক লোকেরা তাহাদিগের সহিত আহার-ব্যবহার করিতেন না । শাস্ত্ৰ বচন প্রমাণে র্তাহারা সকলেই বলিতেন, “তদেশং পতিতং মন্যে যাদেশে শুক্রবিক্ৰয়ঃ।” যে দেশে শুক্র বিক্রীত হয়, সে দেশ পতিত, ইহাই ঐ বচনের অর্থ। শুক্র বিক্রীত হইলে কেবল বিক্রেতা মাত্র নহে, দেশ পৰ্য্যন্ত পতিত হইয়া ষাইত । হায় হায়! সে দিন এখন কোথায় ? সে শাস্ত্রীয় বচনের গৌরব এখন কোথায় ? এখন ঘরে ঘরে পুত্ৰ-বিক্রয় হইতেছে। কৈ, কেহই ত এখন সে বচনটা একবার মুখেও মানেন না ? বিনা শুক্রে কি পুত্রের উদ্ভব হয় ? পুত্র বিক্রয় করিলে কি শুক্র বিক্রয় করা: হয় না ? এ প্রশ্নের উত্তরদাতা অন্বেষণ করা আবশ্য ফা। পুত্ৰ-বিক্রয়ের স্রোত শীঘ্র শীঘ্ৰ বন্ধ করিতে না পারিলে, দেশের বিবাহ প্ৰথা ক্ৰমশঃ আরও অধিক কলঙ্কিত হইয়া পড়িবে, সন্দেহ নাই। বিংশতিবর্ষ পূৰ্ব্বে আমরা শুনিতাম, কলিকাতায় সুবর্ণবণিক্‌ মহাশয়েরাই পুত্রের বিবাহে কন্যাকৰ্ত্তার নিকট হইতে সম্ভবাদি শুষ্ক গ্ৰহণ করিতেন। এখন সেই সুবর্ণবণিকেরাই ব্ৰাহ্মণ-কায়ন্থের অ দর্শস্থলে দাঁড়াইয়াছেন। সমাজের নাম উচ্চারণ করিতে হুইলেই ব্ৰাহ্মণ কায়স্থ এই উভয় জাতি আমাদের নয়ন-পথে উপস্থিত হন ; সেই ব্ৰাহ্মণ কায়স্থই যখন গৃহ-বিগ্ৰহে উন্মত্ত প্ৰায় হইয়া চলিলেন, তখন আর অপরাপর জাতির কথা আমরা কি বলিব। ঐ দুটা শ্রেষ্ঠ জাতির অধঃপতন হইলেই-সমাজ অধঃপাতে যাইবে, ইহা ধরা কথা।--সমাজ অধঃপাতে যাইয়া বসিয়াছে। অনেক প্রকারেই সমাজ বিপৰ্য্যস্ত হইয়াছে, দিন দিন সমাজ বিছিন্ন