পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

છેr ঘঙ্গরহস্য । । আয়োজন হইয়াছিল, দুষ্কার পরিষ্কার আসন পড়িয়াছিল, একাসনে ভোজন করাই মুসলমানজাতি: অভ্যাস, সেই আসনে আমি উপবেশন করিলাম। একটী কথা বলিতে ভুষ্ট হইল। ভোজনের অগ্রে মুসলমানী, রীতিতে হস্ত-মুখ প্ৰক্ষালন করিতে হয়, ཚོ་ কের দেখাদেখি আমিও তাহা করিয়াছিলাম। বিবিধ উপাদেয় মোগলাই পোলাও, কালিয়া ইত্যাদি পরিতোষ রূপে ভোজন করিলাম । সমস্তই উত্তম কেবল, হিন্দুরা যে মাংসটাকে অখাদ্য বলে, সেই মাংসটা কিছু দাঁড়ী দড়ী-শক্তি শক্ত ।” হিন্দুসন্তানের মুখে এইরূপ বাহাদুরীর পরিচয় কত বড় ভয়ঙ্কর, হিন্দু পাঠকমহাশয়েরা তাহা বিবেচনা করুন। স্বেচ্ছাচারের স্রোতে এই পবিত্র সমাজে কতদূর কদাচার প্রবেশ করিতেছে, তাহা বলিবাের নহে। জাতিভেদ ঘুচিয়া না গেলে ভারতের মঙ্গল হইবে না, এই কথা যাহারা বুঝিয়াছেন, তাহারা সৰ্ব্বভুক্ হইয়া সৰ্ব্বজাতির সহিত এইরূপে পান-তোজন করিয়া ভারত উদ্ধার করিবেন, ইহাই তঁহাদের ব্ৰত। সৰ্ব্বজাতির সহিত একত্ৰ পান ভোজন করলেই যদি ভারতের মঙ্গল হয়, দেশব্যাপী উন্নতি সাধিত হয়, তাহা হইলে সেরূপ মঙ্গল ও সেরূপ উন্নতি আমাদের প্রয়োজন আছে কি না, বিজ্ঞ বিজ্ঞ বিচারকেরা তাহা বিবেচনা করিয়া দেখিবেন। অসবর্ণ-বিবাহ প্ৰচলিত হইলেও ক্রমে ক্রমে হিন্দু-মুসলমানেও বিবাহ চলিতে পারে, কিন্তু মুসলমানেরা তাহাতে সন্মত হইবে কি না, সেই প্রশ্ন বড় কঠিন। আমাদের সমাজ এক্ষণে যেরূপ ভঙ্গপ্রবণ, মুসলমানের সমাজ সে প্রকার নহে। ধৰ্ম্মবুদ্ধিতে কোন কোন অংশে কিছু কিছু গোঁড়ানী থাকিলেও মুসলমান-সমাজ আমাদের আধুনিক সমাজ অপেক্ষা অনেকাংশে শ্ৰেষ্ঠ । মুসলমানের সহিত হিন্দুর বিবাহ চলিবে না, ইহা আমরা ভবিষ্যৎবাণীর স্থায় পূৰ্ব্ব হইতেই বলিয়া রাখিতেছি। অসবর্ণ-বিবাহে দোষ আছে কি গুণ আছে, তাহা বলিবার অধিকার আমল্লা রাখি না, তবে কেবল এইমাত্র বলিতে পারি, বর্তমান যুগে অসবর্ণ-বিবাহ শাস্ত্রনিষিদ্ধ। মনুসংহিতায় আছে, “ব্রাহ্মণরা-ব্রাহ্মণ, ক্ষত্ৰিয়,বৈশ্য, শূদ্র এই চারি বর্ণের কন্য,কে বিবাহ করিতে পারিতেন ; ক্ষত্ৰিয়েরা-ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র এই তিন বর্ণের কন্যাকে বিবাহ করিতে পাঠিতেন ; বৈশ্বের-বৈশ্য, শূদ্র দুই বর্ণের কন্যাকে বিবাহ করিতে পারিতেন ; শূদ্রের কেবল শূদ্র কন্যা ব্যতীত অপর কোন