পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম ভয়ঙ্গ । 90 মাঝিরা স্বচ্ছন্দে দ্বিগুণ ত্ৰিগুণ বোঝাই লইয়া যায়। পুলিস সন্তুষ্ট থাকিলে কেহই তাহদের কিছুই করিতে পারে না, অথচ বে-আইনী বোঝাই লওয়াতে মধ্যে মধ্যে মনুষ্যের জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়, ইহাও সকলে জানেন। গরুর গাড়ীর গাড়োয়ানেরা পান্থ লোকের গতিবিধির ব্যাঘাত জন্মাইতে না পারে, ভারবাহী গরুর স্কন্ধে অধিক ভার চাপাইতে না পারে, এইরূপ আইন আছে। যাহারা সেই আইনানুসারে কাৰ্য্য করিবার জন্য রাস্তায় রাস্তায় পাহারা দেয়, তাহারা তাহা দেখিয়াও দেখে না। কেন দেখে না, তাহার কারণ এই যে, গাড়োয়ানেরা পুলিসপ্রহরীদের পূজা দিতে জানে। আইন যাহা নিষেধ করে, পূজা লইয়া আইন-পালকেরা তাহাতে প্রশ্ৰয় দেয়। প্রহরী অপেক্ষাও যাহারা উচ্চক্ষমতা-প্ৰাপ্ত, তাহারাও যৎসামান্য পূজা পাইলে আইন-অমান্যকারিগণকে পালকে ঢাকিয়া রাখেন । কলিকাতামধ্যে গৃহস্থগণের দুগ্ধ প্ৰায় বিকৃত হইয়া যাইতেছে, গোয়ালারা দুগ্ধের সহিত অধিক পরিমাণে জল মিশ্রিত করে, পুলিসের কৰ্ত্তারা তাহা জানিয়াছেন । ধরিয়া দিতে পারিলে গোয়ালগণের জরিমানাও হয়, ইহাও আমরা মধ্যে মধ্যে দেখিতে পাই।। জলমিশ্রণ অপেক্ষা অধিক দৌরাত্ম্য ফুকা দেওয়া। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বৎসগণকে কসাইয়ের হস্তে বিক্রয় করিয়া চুরাচার নিষ্ঠুর গোয়ালার গাভীর যোনিপথে ফুকা দিয়া দুগ্ধ দোহন করে, পুলিসের কৰ্ত্তারা ইহাও জানিয়াছন, ধরিয়া দিতে পারিলে ফুকাওয়ালগণের অধিক পরিমাণে জরিমানা হয়, পুলিসের বিচারের রিপোর্টে তাহাও আমরা মধ্যে মধ্যে পাঠ করি। যে কাৰ্য্য নগরীমধ্যে নিত্য নিত্য চলিতেছে, সেই কাৰ্য্যের পরিচয় দিবার সময় “মধ্যে মধ্যে” বলিতে হইল কেন, এই একটী বিচারযোগ্য সমস্ত। জল না মিশাইয়া নগরের কোন গোয়ালাই দুগ্ধ বিক্রয় করে না। নিত্যই সাগরীমধ্যে দুগ্ধ বিক্রীত হয়। নিত্য নিত্য কেন তাহারা ধরা পড়ে না, এ কথা জিজ্ঞাসা করিবার লোক নাই। ফুকার কারবার নিত্য নিত্য চলে। ফুকাওয়ালারা নিত্য নিত্য কেন ধরা পড়ে না, মনে করিলে সকলেরই বিস্ময় জন্মে। রাত্রি নবম ঘটিকার সময় সহরে আবকারী দোকান বন্ধ থাকিবার কথা ; কিন্তু প্ৰায় সমস্ত রজনী শৌণ্ডিকালয়ের খরিদ্ধারেরা বঞ্চিত হয় না। যাহারা ধরা পড়িলে দণ্ড পায়, অপরাধ করিয়া তাহারা ধরা পড়ে না কেন ? পুলিসের বাৰ্ষিক বিজ্ঞাপনী৩েও তাঁহা উল্লেখ থাকে না। মিউনিসিপালিটী হইতে বাজারের খাদ্য