পাতা:বঙ্গের প্রতাপ-আদিত্য - ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o /و করিয়া লইবার চেষ্টা করা হইয়াছে । ইহাতে ঐতিহাসিকের ক্লেশ, কিন্তু কবির বিলক্ষণ আনন্দ । মূল সত্যের ফলকে কল্পনা-প্রভাবে মনোহর চিত্র অঙ্কিত করাই কবির ব্যবসায় ! কাব্য ইতিহাস নহে, আদর্শ গঠনই কবির উদ্দেশ্য, তাহার প্রধান লক্ষ্য চিত্রের ও চরিত্রের উৎকর্ষের দিকে । আশা করি, পাঠক “প্ৰতাপ-আদিত্য” নাটকখানি পড়িবার সময় এই কথা স্মরণ রাখিবেন । শঙ্কর চক্ৰবৰ্ত্তীর স্ত্রী কিরূপ ছিলেন, তাহা জানি না। --ইতিহাস তাহা বলিয়া দেয় নাই—কিন্তু তাহাতে কবির কি আসিয়া যায় ? তিনি স্বচ্ছন্দমনে তেজমাধুৰ্য্যময়ী কল্যাণীকে আনিয়া দর্শকবর্গের সম্মুখে উপস্থিত করিলেন, সাধবী ব্ৰাহ্মণীর দিগন্ত-প্রসারিণী প্ৰভায় তাহার চিত্ৰখানি কত উজ্জল হইয়া উঠিল। কিংবদন্তী বলে, মা যশোরেশ্বরীর কৃপাই প্ৰতাপ-আদিত্যের সৌভাগ্যের কারণ, ভারতচন্দ্ৰ লিখিলেন“যুদ্ধকালে সেনাপতি কালী” আর কবিকে পায কে ? তিনি মহিমান্বিতা মাতৃরূপিণী কপালিনী বিজয়া-মূৰ্ত্তি গড়িয়া নিজে ধন্য হইলেন, দশকবৃন্দকেও ধন্য করিলেন । চরিত্র সম্বন্ধে যেরূপ, ঘটনা সম্বন্ধেও সেইরূপ । এ স্থলেও কবি-কল্পনা সকল সময়ে ইতিহাসের সঙ্কীর্ণ প্ৰাচীর দ্বারা আবদ্ধ থাকিতে চাহে না । কোথাও বা নূতন ঘটনার সৃষ্টি করিয়া, কোথাও বা কিংবদন্ত অবলম্বন করিয়া, ৩বায় কোথাও বা ঐতিহাসিক ঘটনাকে কিঞ্চিৎ নোয়াইয়া বাকাইয়া কবি তাহার সাধের চিত্ৰখানিকে নিৰ্দোষ ও পূর্ণাবয়ব করিতে প্ৰয়াস পান। সুতরাং “প্ৰতাপ-আদিত্য” নাটকে উল্লিখিত ঘটনানিচয়ের সহিত যদি ইতিহাসের সর্বত্র সামঞ্জস্য লক্ষিত না হয় ত তাহাতে বিচিত্ৰতা কি ? এরূপ অসামঞ্জস্য সত্ত্বেও “প্ৰতাপ-আদিত্য”কে স্বচ্ছন্দে ঐতিহাসিক নাটক বলা যাইতে পারে, কারণ, ইহার মূল ভিত্তি ইতিহাস। নাটককার কোথাও কোন মুখ্য ঘটনা বা চরিত্রের বিকৃতি করিয়াছেন বলিয়া বোধ হয় না, বরং তঁাহার কৌশলময়ী লেখনীয় গুণে সেগুলি অধিকতর উজ্জ্বল হইয়া উঠিয়াছে। শিৰ শিবই আছেন, বানর