পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাশী।। ৪৫ দর্শনশাস্ত্রের অধ্যাপক পরে কাশীপ্রবাসী স্বনামধন্য ৬/জয়নারায়ণ তর্কপঞ্চানন মহাশয় মুক্তকণ্ঠে বলিতেন, “আজকাল যিনি যাহা রচনা করুন, মুদ্রাব্যন্ত্রে যাইবার | পূর্বে তর্কবাগীশের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করিয়া কাহারও পদক্ষেপ করিবার সাধ্য নাই।” এইরূপে তিনি বিবিধ প্রকারে স্বদেশের কাৰ্য্য করিয়া জীবনের শেষাবস্থায় কাশীপ্রবাসী হন। ১৮৬৪ অব্দে পেন্সনগ্ৰহণ করিয়া তিনি গাৰ্হস্থ্যাশ্রম পরিত্যাগ করেন। ইতিপূৰ্ব্বে ছয় মাসের অবকাশ লইয়া গয়া বারাণসী ও প্ৰয়াগাদি তীর্থ দর্শন করিয়া জীবনের শেষ চারি বৎসর কাশীপ্রবাসে অতিবাহিত করেন। এখানেও তিনি জ্ঞানানুশীলন, যোগসাধন, সাধুভাবের উদ্দীপন এবং বিদ্যাবিতরণাদি কাৰ্য্যেই ব্যাপৃত থাকিতেন। র্তাহার প্রশান্ত সৌম্যমূৰ্ত্তি, লাবণ্যপূৰ্ণ । আকৃতি, ধৰ্ম্মনিষ্ঠা, স্থিরচিত্ততা এবং মিষ্টভাষিতাদি গুণে আকৃষ্ট হইয়া অনেক বিদ্যার্থী আসিয়া তাহার শিষ্যত্ব স্বীকার করিলেন। র্তাহার পয়তাল্লিশ ছচল্লিশ৷ জন ছাত্রের মধ্যে পাঁচ ছয়জন বাঙ্গালী, চারিজন পঞ্জাবী, একজন নেপালী এবং অবশিষ্ট দ্রাবিড়ী ও হিন্দুস্থানী ছিলেন। তন্মধ্যে আবার আট নয়জন। কলেজের ছাত্র এবং দুই জন অধ্যাপক ( সাংখ্যের অধ্যাপক বেচন তেওয়ারী এবং অলঙ্কারের অধ্যাপক শীতলপ্ৰসাদ তেওয়ারী ) তিঁাহার নিকটে পাঠ স্বীকার করিয়াছিলেন। তঁহারা কাব্য, নাটক, অলঙ্কার, বেদান্ত, সাংখ্য, পাতঞ্জলাদি শাস্ত্ৰ অধ্যয়ন করিতেন ; কিন্তু তর্কবাগীশ মহাশয়কে কখন পুস্তক না ধরিয়া, মুখে মুখে সমুদয় শাস্ত্রের অধ্যাপনা করিতে দেখিয়া, সকলে বিস্ময়াপন্ন হইতেন। তর্কবাগীশ মহাশয় পীড়া সঞ্চারের পূর্ব দিবস পৰ্য্যন্ত এই কাৰ্য সমাদরে সম্পাদন করিয়া প্রীতিলাভ করিয়াছিলেন। ১৮৬৭ অব্দের ২৩শে এপ্রেল তিনি বিসূচিকারোগে আক্রান্ত হন এবং ২৬শে এপ্ৰেল মণিকর্ণিকার ঘাটে প্ৰাণবিসর্জন করেন। তখন তাহার বয়স ৬১ বৎসর মাত্র হইয়াছিল। শেষ সময়ে পত্নী ব্যতীত আত্মীয়গণের কেহ নিকটে ছিলেন না। কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পিতা, এবং সার রাধাকান্ত দেব বাহাদুরের জামাতা অমৃতলাল মিত্ৰ মহাশয় তখন কাশীপ্রবাসে। ছিলেন। তঁহারা তঁহার যথেষ্ট শুশ্ৰষা করিয়াছিলেন। তর্কবাগীশ মহাশয়ের ছাত্ৰগণের মধ্যে, কি স্বদেশীয় কি বিদেশীয়, অনেকেই । ংস্কৃত সাহিত্যে কৃতিত্বলাভ করিয়াছেন। ভারতবিখ্যাত বিদ্যাসাগর মহাশয় । ংস্কৃত রচনা শিক্ষা সম্বন্ধে তাহার প্রিয় ও প্রধান ছাত্র ছিলেন। সুকবি মদন- ।