পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రీనా8 গৌরাঙ্গের নবদ্বীপত্যাগের ইচ্ছা-প্রকাশ। বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । সুরধুনী-তীরে কুঞ্জে বিকশিত নীপপুঞ্জে প্রাণ কাদে কেতকী দেখিয়া। নদীয়া আনন্দে ছিল গোকুলের পার হইল বাস্থদেব মরয়ে ঝুরিয়া ॥ সকল মহান্ত মিলি সকালে সিনান করি আইল গৌরাঙ্গ দেখিবাবে । গৌরাঙ্গ গিয়াছে ছাড়ি বিরহে রহিয়াছে পড়ি শচী কঁদে বাহির দুয়ারে। শুন শুন আরে নিতাই গুণমণি ৷ কেবা আসি দিল মন্ত্র শিখাইল কোন তন্ত্ৰ কিবা হইল কিছুই না জানি ॥ ধ্রু॥ কিবা করি লয়ে গেল ছাড়িয়া। কিবা নিষ্ঠুরাই কৈল পাথারে ভাসাইয়া গেল রহিব কাহার মুখ চাহিয়া। কহে বাস্থদেব ভাষা শচীর এমন দশা মরা যেন রহিয়াছে পড়িয় ॥ গোবিন্দ ঘোষ । প্রাণের মুকুন্দ হে কি আজ শুনিলু আচম্বিত। কহিতে পরাণ যায় মুখে নাহি বাহিরায় গৌরাঙ্গ ছাড়িবে নবদ্বীপ। ইহাত না জানি মোরা সকালে মিলিতু গোরা অবনত মাথে আছে বসি । নিঝরে নয়ন ঝরে বুক বাহি ধারা পড়ে মলিন হয়্যাছে মুখ-শশী ॥ দেখিয়া তখনি প্রাণ সদা করে আনচান সুধাইতে নাহি অবসর। ক্ষণেকে সম্বিত হৈল তবে মুঞি নিবেদিল শুনিয়া দিলেন এ উত্তর ॥ আমি ত বিবশ হৈয়া তারে কিছু না কহিয়া ধাইয়া আইনু তুআ পাশ । এই ত কহিনু আমি যে কহিতে পার তুমি মোর নাহি জীবনের আশ ৷ শুনিয়া মুকুন্দ কান্দে হিয়া থির নাহি বান্ধে গদাধরের বদন হেরিয়া। এ গোবিন্দ ঘোষ কয় ইহা যেন নাহি হয় তবে মুঞি যাইব মরিয়া । নরহরি। নরহরি দাস শ্ৰীখণ্ডের বৈদ্যবংশোদ্ভব এবং চৈতন্যপ্রভুর প্রিয়তম পার্ষদ ছিলেন। ইহার বংশীয়েরা এখনও শ্ৰীখণ্ডের বৈষ্ণব গোস্বামী নামে পরিচিত। গোবিন্দ কৰ্ম্মকারের কড়চায় লিখিত আছে যে, মহাপ্ৰভু দাক্ষিণাত্য-ভ্রমণকালে একদা অজ্ঞানাবস্থায় নরহরিকে স্মরণ করিয়াছিলেন। যথা, “কখন বলেন কোথা প্রাণ-নরহরি। হরিনাম শুনে তোমা আলিঙ্গন করি ॥” পরাণ-নিমাই মোর খেপা বড় বটে গো একদিন দেখিকু নয়নে । ধূলায় ধূসর তনু কিবা অপরূপ গো হামাগুড়ি ফিরয়ে অঙ্গনে।