পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিত্তরঞ্জন দাশ ክrእ করিয়া ভুবনমোহন বাবু ঋণগ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছিলেন। তিনি ঋণদায়ে বিব্রত হইয়া অবশেষে দেউলিয়া হন। এই ঘটনা উপলক্ষে চিত্তরঞ্জনের মহৎ চরিত্র মহত্তর ভাবে পরিস্ফুট হইয়া উঠে। কৰ্মজীবনে প্রবৃত্ত হইয়া অর্থে পার্জন করিয়া চিত্তরঞ্জন পিতৃঋণ স্বীকার করিয়া সেই ঋণ কড়ায় গন্ডীয় পরিশোধ করেন। দেউলিয়া পিতার ঋণের জন্য চিত্তরঞ্জন আইনের কাছে একটুও দায়ী ছিলেন না। কিন্তু ধর্মের কাছে তিনি নিজেকে কিছুতেই দায়িত্বহীন মনে করিতে পারেন নাই। পিতার উপযুক্ত পুত্রের কর্তব্য তিনি সম্পাদন করিয়াছিলেন। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে বিলাত হইতে কলিকাতায় প্রত্যাগমন করিয়া চিত্তরঞ্জন কলিকাতা হাইকোর্টে ব্যারিস্টারি করিতে প্ৰবৃত্ত হন। কিন্তু প্ৰথম প্রথম জুনিয়ার ব্যারিস্টারদের যে সকল অসুবিধা ভোগ করিতে হয়, চিত্তরঞ্জনও তাঁহাদের হাত হইতে নিষ্কৃতি লাভ করিতে পারেন নাই। চিত্তরঞ্জনের সম্বলের মধ্যে ছিল তাহার অলৌকিক প্রতিভা, অনন্যসাধারণ কর্তব্যনিষ্ঠা ও অসাধারণ আইনজ্ঞান। এই তিনটি মূলধন অবলম্বন করিয়া তিনি কৰ্মসমুদ্রে কঁপ দিলেন। কয়েক বৎসরের অক্লান্ত চেষ্টার পর ভাণ্য র্তাহার প্রতি সুপ্ৰসন্ন হইল। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে আলিপুরের বোমার মামলা উপস্থিত হইল। এই মামলায় চিত্তরঞ্জন আসামি পক্ষ সমর্থন করিতে নিযুক্ত হইলেন। এই মামলায় অসামান্য আইনজ্ঞানের পরিচয় দিয়া, মামলাটিকে সুপরিচালিত করিয়া তিনি পরিণামে জয়যুক্ত হইলেন। এই মামলার অন্যতম আসামি সুবিখ্যাত শ্ৰীযুক্ত অরবিন্দ ঘোষ চিত্তরঞ্জনের অনন্যসাধারণ প্রতিভাগুণে মুক্তিলাভ করিলেন। এই মামলা পরিচালন করিতে চিত্তরঞ্জনকে যেরাপ অক্লান্ত পরিশ্রম করিতে হইয়াছিল, তদনুপাতে প্ৰাপ্তির সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু মামলায় জয়লাভ করার পর তাহার যশে দেশ পূর্ণ হইল। সেই সময় হইতে ব্যারিস্টারি ব্যবসায়ে তাহার জলের মত অর্থাগম হইতে লাগিল। এই সময়ে হইতে বড় বড় জটিল মোকদ্দমায় চিত্তরঞ্জন কোন না কোন পক্ষে নিযুক্ত হইতে লাগিলেন। বিশেষ করিয়া রাজনীতিক মামলায় আসামীগণের পক্ষ সমর্থন করিবার ভার তাহার উপর পাড়িতে লাগিল, এবং তিনিও প্রায়ই তাঁহাদের রক্ষা করিতে লাগিলেন। এ সময়ে তিনি প্রত্যহ সহস্র মুদ্রা উপার্জন করিতেন। চিত্তরঞ্জন বাংলার যে কি ছিলেন, তাহার পরিচয় দেওয়া সহজ নয়। চিত্তরঞ্জন ছিলেন বাংলার চিত্তের আনন্দ, অস্তরের অন্তৰ্গঢ় বেদনা ; চিত্তরঞ্জন ছিলেন ভারতের অতীতের মূর্ত বিগ্রহ এবং ভবিষ্যতের আশার অপর্যাপ্ত উচ্ছসিত অভিব্যক্তি। প্ৰহত হইয়াছে, সেখানে আমরা দেশবন্ধুকে দীনবন্ধুর মূর্তিতে প্ৰত্যক্ষ করিয়াছি। প্রথম জীবনে দুঃখ কষ্টের সহিত অক্লান্তভাবে যুদ্ধ করিয়া তাহাকে জয়লাভ করিতে হইয়াছিল। পরিণত জীবনের প্রাচুর্যের ভিতর তাই তঁহার দ্বার হইতে প্রাধী কখন রিক্ত-হস্তে २ट्क्र/*:ष्ट्र-७