পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

इCा>bही अद्ध বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে যে কয়েকজন মনীষী তাঁহাদের ভাব ও ভাষা দ্বারা সাহিত্যের পরিপুষ্টি সাধন ও তাহার নূতন রূপ দিয়াছিলেন। তঁহাদের মধ্যে রমেশচন্দ্ৰ দত্ত মহাশয় অন্যতম শ্রেষ্ঠ। কোনো বিশেষ বিষয়েই যে সাহিত্য-প্রতিভা নিবদ্ধ ছিল তাহা নহে ; সে প্রতিভা ছিল সর্বতোমুখী। কলিকাতার রামবাগানের প্রসিদ্ধ দত্তবংশে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ঈশানচন্দ্ৰ দত্ত মহাশয় তাহার পিতা ; রমেশচন্দ্র তাহার দ্বিতীয় পুত্র। ইংরেজি ১৮৪৮ খ্রিস্টাবেজ ১৩ আগস্ট তাহার জন্ম হয়। কলিকাতার শিক্ষার পর তিনি তাহার দুই বাল্যবন্ধুর সহিত গমন করেন। তখনকার দিনে ইংল্যান্ডে গমন এখনকার মত সুলভ ও সহজ ছিল না। সে প্রায় ৭০ বৎসর পূর্বের কথা। এই তিন বন্ধুর একত্র অধ্যয়নের ফলে উচ্চাকাঙ্ক্ষার ধারাও একই ভাবে প্রাধাবিত হইয়াছিল। এই তিন বন্ধুর একজন স্বয়ং রমেশচন্দ্ৰ, দ্বিতীয় সুপ্ৰসিদ্ধ বিচারপতি বিহারীলাল গুপ্ত’ এবং তৃতীয় দেশপূজন্তু বাক্ষীশ্ৰেষ্ঠ জননায়ক সুরেন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তীর্ণ ছাত্ৰগণের মধ্যে রমেশচন্দ্ৰ তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সকলে একত্রে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। তৎপুর্বে মাত্র একজন বাঙালি ছাত্র আই. সি. এস পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জন করিয়াছিলেন--তিনি আমাদের মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র ও কবীন্দ্র রবীন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠ সহােদর সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর।* দেশে ফিরিয়া আসিয়া রমেশচন্দ্ৰ প্ৰথমে বঙ্গদেশে শাসনবিভাগের কার্য আরম্ভ করেন। ইহার পর তিনি নানা জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট পদ অলংকৃত করেন ও শেষে ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিভাগীয় কমিশনারের পদে উন্নীত হন। এই পদে তিনিই প্রথম ভারতীয় ছিলেন। তখন লর্ড রিপনের* আমল। বিখ্যাত ইলবার্ট বিল* তখন পাশ হয়। চারিদিকে একটা শোরগোল পড়িয়া গেল-দেশময় চাঞ্চল্য। রমেশচন্দ্র তখন বর্ধমান বিভাগের কমিশনার। সুতরাং জেলার শ্বেতাঙ্গ ম্যাজিষ্ট্রেটগণ কিছুতেই একজন বাঙালির অধীনে কর্ম করিতে রাজি হন নাই। এই উদ্দেশ্যে র্তাহারা একযোগে ছুটির প্রার্থনা জানান। ইহাতেই দেখা যায় যে তঁহার এই উচ্চপদ প্ৰাপ্তিতে ইউরোপীয় মহলেও একটা সাড়া পড়িয়া গিয়াছিল। তিনি যে শুধুই সরকারি উচ্চপদ লাভ করিয়াছিলেন তাহা নহে, পরন্তু জাতীয় জীবনের গঠনেও সমধিক কৃতিত্ব দেখাইয়া গিয়াছেন। সাহিত্যের ভিতর দিয়া দেশহিতৈষণার চেষ্টা