পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় SSS ম্যালেরিয়ায় ভুগিয়াছিলেন। পরে আরোগ্যলাভ করিয়া স্কুলে ভরতি হন ও নিয়মিত অধ্যয়ন করিয়া প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে কৃষ্ণনগর কলেজ হইতে এফ. এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া দ্বিজেন্দ্রলাল হুগলি কলেজে যান এবং সেই কলেজ হইতে বি. এ পরীক্ষা পাশ করেন। ১২৯১ সালে কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ হইতে এম. এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া দ্বিজেন্দ্রলাল রেভেলগঞ্জ স্কুলে হেডমাস্টারন্ট হন। এই সময়ে কৃষিবিদ্যা শিক্ষার্থে রাজকীয় বৃত্তি প্ৰাপ্ত হইয়া দ্বিজেন্দ্রলাল ইংল্যান্ড যাত্রা করেন। যথাকলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া দেশে প্রত্যাগমন করিলেন গভর্নমেন্ট তাঁহাকে সেটেলমেন্টের* কার্যে নিযুক্ত করেন। এই সূত্রে কিছুদিন সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্য করিয়া পরে ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট৬ হন। ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রতাপচন্দ্র মজুমদারের কন্যা সুরবালা দেবীকে বিবাহ করেন। কিয়ৎকাল পরে তিনি আবগারি বিভাগের প্রথম ইনস্পেকটার নিযুক্ত হন ও তাহার কর্ম জীবনের শেষের দিকে বাঁকুড়ায় কাৰ্য্য করিয়া অবসর গ্রহণ করেন। ছাত্রাবস্থা হইতেই তিনি সাহিত্য ও সঙ্গীতের চর্চা করিতেন। তিনি যেমন সুপুরুষ ছিলেন তেমনই সুরসিক, সদবক্তা ও সুকণ্ঠ ছিলেন। ছাত্রজীবন হইতেই নানা বিষয়ে প্ৰবন্ধাদি পাঠ ও আলোচনায় তিনি অসাধারণ কৃতিত্ব প্রদর্শন করিয়া গিয়াছেন। তঁহার সঙ্গীতালোচনার সংবাদ পাইলে সেস্থানে অত্যধিক জনসমাগম হইত। একে তঁহার লিখিত সঙ্গীত সুললিত ভাষা, সুমধুর ঝঙ্কাব ও কবিত্বপূর্ণ, তাহাতে আবার তঁহারই মধুর কণ্ঠনিঃসৃত সুর-তান-লয় বিশিষ্ট ; সুতরাং ত্যাহা যে অতীব হৃদয়গ্রাহী হইত। তাহা বলাই বাহুল্য। তিনি কোথাও আসিয়াছেন। এ সংবাদ প্রচারিত হইবামাত্ৰ চারিদিক হইতে লোকের আগমন হইত ; তাহার সঙ্গীত আলাপন না শুনিয়া তাহারা তঁহাকে ছাড়িত না। তঁহার হাসির গানগুলি যেমন মিষ্ট ও রসপূর্ণ র্তাহার স্বদেশ সঙ্গীতগুলি তেমনি বীরত্বব্যঞ্জক ও ভাবপূর্ণ। অন্যান্য গানগুলিও তেমনি মধুর কবিত্বপূর্ণ। ফলত সঙ্গীত রচনায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। র্তাহার “আমার জন্মভূমি” “আমার দেশ”৯ “বঙ্গভাষা”১০ “ভারতবর্ষ*** প্রমুখ গানগুলি চিরদিন অক্ষয় হইয়া থাকিবে। সঙ্গীতের এক একটি পদের মধ্যে দেশের অতীত গৌরবের ইতিহাস কি ভাবে ফুটাইয়া তুলিয়াছেন তাহা, “আমার দেশ” গানটিতে অতি সুন্দর রূপে প্রতিভাত হইয়াছে। বঙ্গজননীকে সম্বোধন করিয়া দ্বিজেন্দ্ৰলাল গাহিয়াছেন ঃ “একদা যাহার বিজয় সেনানী হেলায় লঙ্কা করিল জয়; একদা যাহার অর্ণবপো'ত ভ্ৰমিল ভারত সাগরময়। সস্তান যার তিব্বত চীন জাপানে গঠিল উপনিবেশ ; তুই কিনা মাগো তাদের জননী, তুই কিনা মাগো তাদের দেশ। উদিল যেখানে বুদ্ধ-আত্মা মুক্ত করিতে মোক্ষ দ্বার ; আজিও জুড়িয়া অর্ধজগৎ ভক্তি-প্ৰণত চরণে র্তার। অশোক যাহার কীর্তি ছাইল গান্ধীর হতে জলধি শেষ ; তার কিনা। এই ধূলায় আসন তার কিনা। এই ছিন্ন বেশী।” ܛܚܚܐ7ܐܼ#zܛrܗ7؟