পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনচন্দ্ৰ পাল Swx সংবাদপত্রের সম্পাদকের জীবন গ্রহণ করায় তাহাকে বহু সাময়িক পত্রের সংশ্রবে: আসিতে হইয়াছিল। তিনি নিউ ইণ্ডিয়া', ৭ “বন্দেমাতরম', 'ডেমােক্রট'* ‘ইণ্ডিপেণ্ডেণ্ট” ১° প্ৰভৃতি বহু দৈনিক পত্রের সম্পাদনের কাজ করিয়াছিলেন। শ্ৰীযুক্ত অরবিন্দ ঘোষ মহাশয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশে স্বদেশীর মন্ত্র প্রচারের জন্য “বন্দেমাতরম" নামক যে ইংরেজি দৈনিক প্রকাশিত হইয়াছিল, বিপিনচন্দ্ৰ তাহার অন্যতম লেখক ছিলেন। তিনি ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই সমানভাবে প্ৰবন্ধ লিখিতে পারিতেন। তাহার উভয় ভাষায় লিখিত প্ৰবন্ধই সমান সমাদর লাভ করিত। র্তাহার প্রবন্ধগুলি চারিদিকে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত হইয়া আছে; সেগুলি পুস্তকাকারে প্রকাশ করিলে বহু সংখ্যক পুস্তক হইতে পারিত। বিপিনচন্দ্রের রচিত 'শোভনা’,** “ভারত সীমাস্তে রুশ, ১২ জেলের কথা’,** “ভারতের জাতীয়তা’, ১৪ চরিত্র চিত্র’, ১৫ ‘গল্পগ্রন্থ,১৬ ‘সত্যমিথ্যা",১৭ ভারতের আত্মা’, ১৮ জাতীয়তা ও সাম্রাজ্য”১৯ প্রভৃতি পুস্তক যথেষ্ট সমাদৃত হইয়াছে। তিনি যে আত্মজীবনী ২° লিখিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন, তাহা শেষ করিয়া যাইতে পারেন নাই বটে কিন্তু তাহার প্রথমাংশ ইতিহাসের দিক দিয়া এক অপূর্ব সামগ্ৰী হইয়াছে। দেশসেবা করিতে যাইয়া তাঁহাকে বহুবার কারাবরণ করিতে হইয়াছিল। “বন্দেমাতরম' পত্রের প্রথম রাজদ্ৰোহ মামলার সময় গভর্নমেন্ট পক্ষ তাহাকে সাক্ষ্য দিতে আহ্বান করিলে তিনি গভর্নমেন্ট পক্ষে সাক্ষ্য দিতে অসম্মত হন ও সেজন্য তঁাহাকে কারাবরণ করিতে হয়। তাহার পর ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে রাজদ্রোহের অভিযোগে তাহাকে দ্বিতীয় বার জেলা খাটিতে হইয়াছিল। মহারাষ্ট্রনেতা বাল গঙ্গাধর তিলক ২-১ হােমরুল আন্দোলনৰ ২ আরম্ভ করিলেন বিপিনচন্দ্ৰ তাহাতে যোগদান করেন এবং বিলাতে যাইয়া এখানে “স্বরাজ”** পত্রে এক প্ৰবন্ধ লিখিয়া পাঠান। সেই প্ৰবন্ধটি রাজদ্রোহসূচক বিবেচিত হওয়ায় তিনি বোম্বাইয়ে অবতরণ করা মাত্ৰই গভর্নমেন্ট তাহাকে গ্রেপ্তার করেন এবং তঁহার এক মাস কারাদণ্ডের ব্যবস্থা হয়। মহাত্মা গান্ধী কর্তৃক যখন এদেশে প্রথম অসহযোগ আন্দােলন আরম্ভ হয়, তখন বিপিনচন্দ্ৰ সেই আন্দোলনে যোগদান করেন। কিন্তু অসহযোগ আন্দোলনের কর্মপদ্ধতি লইয়া নেতৃবৃন্দের সহিত মতভেদ হওয়ায় তিনি উক্ত আন্দােলন ত্যাগ করেন। তাহার পূর্বে পণ্ডিত মতিলাল নেহরু এলাহাবাদ হইতে ইণ্ডিপেণ্ডেণ্ট” নামক এক ইংরেজি দৈনিক সংবাদপত্র প্রকাশ করিয়াছিলেন এবং বিপিনচন্দ্রকে উক্ত পত্রের সম্পাদক পদে নিযুক্ত করিয়াছিলেন। তখন পণ্ডিত মতিলাল ব্যারিস্টারি কার্য ত্যাগ করেন নাই। সে সময়ে তাহার মত অর্থশালী ব্যক্তি ঐ অঞ্চলে অতি অল্পই ছিল। বিপিনচন্দ্রের এলাহাবাদ বাসকালে সুখসমৃদ্ধির কোনই অভাব ছিল না। কিন্তু কাগজের মত লইয়া পণ্ডিত মতিলালের সহিত মতভেদ হওয়ায় তিনি ঐ চাকরি ত্যাগ করিয়া চলিয়া আসিয়াছিলেন। আবার তাহকে সেই দারিদ্র্যের কঠোর পেষণ সহ্য করিতে হইয়াছিল। তিনি সুরেন্দ্রনাথের