পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So বঙ্গ-গৌরব তাহার অর্থ সর্বদা পরোপকারের জন্য ব্যয়িত হইত। তঁহার অর্থ-সাহায্য লাভ করিয়া ফরিদপুর ও যশোহর জেলার বহু ছাত্র শিক্ষালাভ করিয়া ধন্য হইয়াছে। নিজের গ্রামের প্রতি তাহার বিশেষ আকর্ষণ ছিল ; যে-কোনো গ্রামবাসী কলকাতা আসিলেই তাহার গৃহে আদর অভ্যর্থনা লাভ করিত। গ্রামবাসীরা যে-কোনো উপকার লাভের জন্য র্তাহার স্বগ্রামে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন; পিতার নামে স্বগ্রামে তিনি একটি মধ্য-ইংরেজি বিদ্যালয় করিয়া দিয়াছেন। গ্রামের পথগুলি তাহার অর্থে নির্মিত ও সংস্কৃত হইত ; গ্রামে তাঁহারই অর্থে মন্দির নির্মিত হইয়াছে, বহুসংখ্যক নলকূপ খনন করা হইয়াছে ও দুইটি নূতন পুষ্করিণী হইয়াছে। গ্রামের জন্য তিনি যে কত অর্থ ব্যয় করিতেন, তাহার ইয়াত্তা নাই। তিনি যে এত অধিক দান করিতেন, তাহা তাহার নিকটাত্মীয়গণও জানিতে পারিতেন না। মৃত্যুর ২৫ বৎসর পূর্বে তিনি পত্নীহীন হইয়াছিলেন। স্বীয় পত্নীর স্মৃতিরক্ষার্থ কসৌলি পাস্তুর ইনস্টিটিউটে ১১ তিনি একটি বড় বাংলো প্ৰস্তুত করাইয়াছিলেন এবং যাদবপুর যক্ষ্মা হাসপাতালে** একজন রোগীর বাসের ব্যবস্থা করিয়া দিয়াছিলেন। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২৮ অক্টোবর ৭৫ বৎসর বয়সে তাহার পরলোকপ্ৰাপ্তি ঘটিয়াছে। ঈশানচন্দ্রের পুত্ৰ ভাগ্যও উল্লেখের যোগ্য। জ্যেষ্ঠপুত্ৰ প্ৰফুল্লচন্দ্র সৃষ্ট দীর্ঘকাল সুখ্যাতির সহিত কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপকের পদ অলংকৃত করিতেছেন। প্ৰফুল্লচন্দ্রের দ্বারা তাহার পিতার সুনাম আরও বর্ধিত হইয়াছে ; কনিষ্ঠ প্রতুলচন্দ্ৰও কলিকতাস্থ বঙ্গবাসী কলেজের অন্যতম অধ্যাপক। পুত্রদ্বয়ও পিতার গুণাবলি লাভ করিয়াছেন এবং তঁহার পদাঙ্ক অনুসরণ করিয়া কাৰ্য করিয়া থাকেন। প্রফুল্লচন্দ্ৰ র্তাহার স্বোেপাজিত বহু অর্থ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করিয়াছেন।