পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:XVe বঙ্গ-গৌরব অশ্বিনীকুমার দত্ত ১. ব্যারিস্টার মনোমোহন ঘোষ (১৩.৩.১৮১৪-১৬.১০.১৮৯৬) : মনোমোহন ঘোষ প্ৰথম ভারতীয় ব্যারিস্টার হিসেবে ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে হাইকোর্টে ব্যবসায় শুরু করেন ও অল্পদিনেই যথেষ্ট খ্যাতিমান ও বিত্তবান হন। তিনি অরবিন্দের পিতা কৃষ্ণধন ঘোষের বন্ধু ছিলেন। তঁদের স্ত্রীরাও পরস্পরের বন্ধু ছিলেন। তারা একে অন্যকে ‘গোলাপ’ বলে ডাকতেন। মনোমোহন ঘোষের থিয়েটার রোডেই বাড়িতেই অরবিন্দ ভূমিষ্ট হন। দিনটি ছিল ১৮৭২ এর ১৫ আগস্ট। ২. লালমোহন ঘোষ (১২৫৪-১৩১৬) : ইনি স্বনাম প্ৰসিদ্ধ ব্যারিস্টার মনোমোহন ঘোষের কনিষ্ঠ ভ্রাতা। ইনি একবার কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন। তিনি ব্যারিস্টারি পরীক্ষা দেবার জন্য ইংল্যান্ডে যান ও ঐ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইংল্যান্ডে অবস্থিতি কালে তথায় ভারতের অভাব অভিযোগ সম্বন্ধে ওজস্বিনী ভাষায় বক্তৃতা করেন ও যশস্বী হন। র্তার মত সরল ইংরেজিতে বক্তৃতা দিতে খুব কম লোকই পারতেন। তিনি নিভীক ও সুবক্তা ছিলেন। ৩। ভূপেন্দ্রনাথ বসু (১৮৫৯-১৬৯.১৯২৪) : কৃষ্ণনগর স্কুল থেকে প্রবেশিকা, প্রেসিডেন্সি থেকে বি.এ. ও ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স সহ কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন। পরে আইন ব্যবসায়ে অসামান্য খ্যাতি লাভ করেন। কলিকতা কর্পোরেশনের কমিশনার ও সভাপতি নির্বাচিত হন। আশুতোষের মৃত্যুর পর (১৯২৪) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন। নানা সংস্থা ও বহুজনহিতকর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৪। রাসবিহারী ঘোষ (২৩.১২.১৮৪৫-২৮.২-১৯২১) : বাঁকুড়া হাইস্কুল থেকে ১৮৬০-এ এনট্রান্স, ১৮৬৬ তে বি.এ. ও ইংরেজিতে অনার্সসহ প্ৰথম শ্রেণিতে এম.এ. পাস করে, ১৮৬৭ তে আইন পাস করে বহরমপুর কলেজে কিছুকাল অধ্যাপনা করেন। ১৮৭২-এ হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। স্যার আশুতোষ ও ড. রাজেন্দ্ৰ প্ৰসাদ একসময় তার সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠাকুর আইন অধ্যাপক রূপেও বহু মূল্যবান বক্তৃতা দিয়েছেন। দেশীয় শিল্পের উন্নতির জন্য কলকাতার কাছে একটি ম্যাচ ফ্যাক্টরি স্থাপন করেন। ১৯০৫ এ যে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ স্থাপিত হয়। আমৃত্যু তার সভাপতি ছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু টাকা দান করেছেন। ৫. ভক্তিযোগ : (১৯১৮) আশ্বিনীকুমার দত্ত লিখিত একটি বিশিষ্ট গ্রন্থ। এতে ভক্তি কি, ভক্তির অধিকারী কে, কামক্রোধাদি ষড়রিপু দূরীভূত করার উপায়, প্রবৃত্তি দমন, শ্ৰীচৈতন্য রচিত পঞ্চসাধন, ভক্তির ক্রম ও ভক্তের লক্ষণ প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে। আর সকল ধর্মই এক আর সকল ধর্মেরই লক্ষ্য ঈশ্বর প্রাপ্তি, আর ভক্তিই এই ঈশ্বর প্ৰাপ্তির প্রকৃষ্ট উপায়-এ সবই এই গ্রন্থের প্রতিপাদ্য বিষয়। গুণদাচরণ সেন The culture of devotion নামে এর একটি ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেন। ৬ ভক্তিযোগ সম্পর্কে বঙ্কিমের উক্তি ; “আপনার (অশ্বিনীকুমার দত্ত) প্ৰণীত ‘ভক্তিযোগ’ গ্ৰন্থ আর একবার পাঠ করিয়া আপনার প্রশ্নের উত্তর দিব। ইচ্ছা ছিল, কিন্তু