পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টীকা ও প্রাসঙ্গিক তথ্য SSA আবদুল লতিফ নিজেই মনে করতেন, মধ্য ও উচ্চবিত্ত মুসলমানদের শিক্ষার বাহন হওয়া উচিত উর্দু। গ্রামের নিম্নশ্রেণির মুসলমানরা আরবি-ফারসি শব্দবহুল বাংলার চর্চা করলেও করতে পারেন। শিক্ষা কমিশনের কাছে মতামত দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, “My opinion as regards Bengal is that Primary instruction for the lower classes of the people, who for the most Part are ethnically allied to the Hindoos should be in the Bengali Language...for the middle and upper classes of Mahomedans, the Urdoo should be recognised as the vernacular.” স্বপন বসু-মুসলমানের বাংলা শিক্ষা-উনিশ শতকে” (প্ৰ.) 'গোপালচন্দ্ৰ মজুমদার ঃ একালের শিক্ষাভাবনা’ গ্রন্থে উদ্ধৃত পৃ. ৮৪। ৫. কলিকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ঃ সংবাদপত্রে সেকালের কথা (১ম)।” (পূঃ ৪১৯) গ্রন্থে ব্ৰজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন-“১৭৮০ সনের সেপ্টেম্বর মাসে কতকগুলি শিক্ষিতপাদস্থ মুসলমান গভর্ণর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া জানান যে, তাহারা মজিদ-উদ্দীন নামে একজন পণ্ডিতের সন্ধান পাইয়াছেন, এবং এই সুযোগে একটি মাদ্রাসা বা কলেজ প্রতিষ্ঠা করিলে মুসলমান ছাত্রেরা মজিদ-উদ্দিনের অধীনে প্রধানত মুসলমান আইন শিখিয়া সরকারী কার্যের উপযুক্ত হইতে পরিবে। হেস্টিংস এই প্ৰস্তাবে সম্মত হন এবং পরবতী অক্টোবর মাসে মজিদ-উদ্দীনের উপর একটি স্কুল চালাইবার ভার দেন। ইহার জন্য মাসে মাসে ৬২৫ টাকা ব্যয় হইতে লাগিল। স্কুল গৃহ নির্মাণের জন্য অল্পদিন পরেই হেস্টিংস ৫৬৪১ টাকা দিয়া বৈঠকখানার নিকট পদ্মপুকুরে’ এক খণ্ড জমি কিনিলেন। ... ১৭৮২ এর জুন মাসের পূর্বেই মাদ্রাসা নির্মিত হইয়াছিল। ...কিন্তু স্থানটি অস্বাস্থ্যকর, এবং ছাত্ৰগণের নৈতিক উন্নতির পরিপহী বিবেচিত হওয়ায় ১৮২৩ সনের জুন মাসে মুসলমান বহুল কলিঙ্গতে (বর্তমান ওয়েলেসলি স্কোয়ার) সরকার এক নূতন মাদ্রাসা স্থাপন করিবার সঙ্কল্প করেন। ১৮২৪ সনের ১৫ই জুলাই তারিখে বর্তমান মাদ্রাসার ভিত্তি স্থাপিত হয়। ১৮২৭ সনের আগস্ট মাস হইতে এখানে নিয়মিতরাপে কলেজের কাৰ্য চলিতে থাকে।” ৬ মাদ্রাসা, ইংরেজি শিক্ষাও মুসলমান ছাত্র ৪ জানা যায় অতি কম মুসলমান ছাত্র মাদ্রাসায় ইংরেজি পড়ত। সেই সময়ের একটি ছবি শম্ভুচন্দ্ৰ মুখোপাধ্যায়। তার উনিশ শতকে প্রতিষ্ঠিত ‘Reis and Rayyet’ পত্রিকায়। যা বলেছিলেন তার অনুবাদে দাঁড়ায়“কেউই ইংরেজি শিখতে চাইত না। ইংরেজি শেখাবার শ্রেণিগুলোতে ছাত্রশূন্য বেঞ্চের সামনে শিক্ষককে একা বসে থাকতে হােত। আজামুদ্দিন আসান, জৈনুদ্দিম হােসেন এবং আবদুল লতিফ প্রমুখ কয়েকজন প্রতিভাবান ছাত্র প্রথমে কুসংস্কার ছিন্ন করে নতুন পথে এগিয়ে যায়।” আবদুল লতিফ ১৮৪০ থেকে ১৮৪৬ পর্যন্ত অর্থাৎ বিদ্যালয় পরিত্যাগ কাল পর্যন্ত ইংরেজি বিভাগে অধ্যয়ন করেছিলেন ও প্রতি বছরই ছাত্রবৃত্তি পেয়েছিলেন। তিনি প্রায়ই প্রথম স্থান অধিকার করতেন।