পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sš বঙ্গ-গৌরব এই আবদুল ওয়াহাবের বংশধরগণ পুরুষানুক্রমে এই প্রদেশে কাজির স্থান অধিকার করেছিলেন। পণ্ডিত্য, বদান্যতা, সৌজন্য, শিষ্টাচার প্রভৃতির ফলে সেখানকার লোকেদের শ্রদ্ধা ও শ্ৰীতি অর্জনে সমর্থ হয়েছিলেন। ওয়াহাবের পরবতীগণের বংশতালিকা এরূপঃ কাজি আবদুল ওয়াহাব কাজি মহম্মদ আসরাফ কাজি আবদুস শুকুর J কাজি মহম্মদ রেজা কাজি ফকির মহম্মদ এই কাজি ফকির মহম্মদের দ্বিতীয় পুত্র আবদুল লতিফ। ২. কলিকাতার দেওয়ানি আদালতে ওকালতি ৪ রাজাপুরের কাজিরা একসময় সঙ্গতিপন্ন থাকলেও বহুবিবাহ প্রথার ফলে এদের বংশবৃদ্ধি হওয়ার সম্পত্তি নানাভাগে ভাগ হয়ে অবস্থা অসচ্ছল হয়ে যায়। তাই আবদুল লতিফের পিতা কাজি ফকির মহম্মদ জীবিকার কারণে কলকাতা আসেন। এখানে তঁর স্ত্রীর ককা মুনশি বকউল্লা সদর দেওয়ানি আদালতের একজন প্ৰসিদ্ধ উকিল ছিলেন। কাজি ফকির তীর সহকারীরূপে কাজ করতে থাকেন। বকউল্লার মৃত্যুর পর বিচারপতিরা ফকির মহম্মদকে উকিলের পদে নিযুক্ত করেন। তিনি ২৮ বৎসর কােল এই পদে কাজ করেছেন । ৩ লতিফের জন্ম ঃ আবদুল লতিফের জন্ম ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে মার্চ মাসে। কোনো কোনো বইতে ১৮২৬ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জলধর সেন ছাড়া ‘সেকালের কৃতী বাঙালী”-মন্মথনাথ ঘোষের লেখা বইতে ১৮২৮ রয়েছে। কিন্তু শামসুজ্জামান ও সেলিনা হােসেন সম্পাদিত ঢাকা থেকে প্রকাশিত চরিতাভিধান’ গ্ৰন্থ রয়েছে ১৮২৬৷৷ ৪। মাদ্রাসায় ইংরেজি বিভাগ খোলা হইলে ৪ আরবি ও পারসি ভাষায় মুসলমান ধর্মশাস্ত্ৰ, ব্যবস্থশাস্ত্র প্রভৃতি শিক্ষা দেওয়াই মাদ্রাসার একমাত্ৰ কাম্য ছিল। ইংরেজি ভাষার সাহায্যে পাশ্চাত্যের বিজ্ঞান প্রভৃতি শিক্ষা দেওয়া এর উদ্দেশ্য ছিল না। “১৮২৬ খ্রিস্টােব্দ পর্যন্ত মাদ্রাসায় ইংরাজী শিক্ষা প্রদানের কোনো ব্যবস্থা ছিলনা। এই বৎসর একটি ইংরাজী শ্রেণী খোলা হয়। কিন্তু মুসলমান ছাত্ৰগণের ইংরাজী শিক্ষার কোনও আগ্রহ পরিদৃষ্ট না হওয়ায় উহা শীঘ্রই বন্ধ হইয়া যায়। ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাসার একটি স্বতন্ত্র ইংরাজী বিভাগ স্থাপিত হয়।” (মন্মথ নাথ ঘোষ-সেকালের কৃতী বাঙালী... og sy) প্রসঙ্গত জানানো যায় যে, বাংলা শেখার ক্ষেত্রেও মুসলমানদের একটু দ্বিধা ছিল।