পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 8 वत्र-6द्भव কেহ দাঁড়াইতে পরিবে না। এ বালক ভবিষ্যতে মহাপুরুষ হইবে। আমি নিজে ইহাকে দীক্ষা দান করিলাম এবং ইহার নাম রাখিলাম ঈশ্বরচন্দ্র”। পাঁচ বৎসর বয়সে গ্রামের গুরুমহাশয়ের পাঠশালায় ঈশ্বরচন্দ্রের হাতে-খড়ি হয়। বিদ্যারম্ভের বৎসর-খানেকের মধ্যে একবার তিনি অসুস্থ হইয়া পড়েন ; চিকিৎসার জন্য প্রায় ছয়মাস কাল তঁহাকে পাতুলে গিয়া থাকিতে হয়। মাতুল রাধামোহন বিদ্যাভূষণের* যত্নে আরোগ্যলাভের পর তিনি বীরসিংহে ফিরিয়া আসেন এবং পুনরায় সেই পাঠশালায় ভরতি হন। আট বৎসর বয়সের সময় পড়িবার জন্য তিনি পিতার সঙ্গে কলিকাতা যাত্ৰা করেন । ইংরেজি সংখ্যা দেখিয়া তিনি কলিকাতা পৌঁছিয়া ইংরেজি বিলের অঙ্ক-সংখ্যা যোগ করিতে পিতার সাহায্য করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর ১২৩৫ সালের কীর্তিক মাসে কলিকাতায় আসেন এবং অল্প দিনের মধ্যেই রক্তাতিসার রোগে আক্রান্ত হন। ঠাকুরদাস ভাগবত সিংহের বাড়িতেই থাকিতেন। ভাগবতবাবুর পুত্র জগদ্দুর্লভ সিংহ, বিশেষত র্তাহার ভগিনী রাইমণি বিদ্যাসাগরকে বড় ভালবাসিতেন। তঁহাদের প্রাণপণ যত্নেও বিদ্যাসাগর আরোগ্যলাভ করিলেন না ; তখন তঁহার পিতামহ কলিকাতায় আসিয়া তাহাকে দেশে লইয়া গেলেন। আরোগ্যলাভ করিয়া তিনি পুনরায় কলিকাতায় আসিয়াছিলেন এবং ইং ১৮২৯ অব্দে ১ জুন সংস্কৃত কলেজে ভরতি হইলেন। নয় বৎসর বয়সে কলেজে প্ৰবেশ করিয়া একুশ বৎসর বয়সে ব্যাকরণ, সাহিত্য, কাব্য, অলঙ্কার, ন্যায়, স্মৃতি বেদাস্ত ইত্যাদি শাস্ত্রের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া তিনি “বিদ্যাসাগর’ উপাধি লাভ করিয়াছিলেন। কলেজে বরাবর তিনি প্রথম স্থান অধিকার করিয়া গিয়াছেন, বৃত্তি পাইয়াছেন; অধ্যাপকগণ তঁহার অসাধারণ বুদ্ধি,অতুলনীয় স্মৃতিশক্তি, নিষ্ঠাপূৰ্ণ অনুরাগ এবং প্রচুর পরিশ্রম-সামৰ্থ্য দেখিয়া মুগ্ধ হইতেন, এবং তঁহাকে পুত্ৰাধিক স্নেহ করিতেন। বিদ্যাসাগর কলেজে প্রবেশের ছয় মাস পরের পরীক্ষায় পাঁচ টাকা বৃত্তি পান; সতেরো বৎসর বয়সে” সেকালের কঠিন পরীক্ষা ল’ কমিটির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া ত্রিপুরা জেলায় জজ-পণ্ডিতের পদ প্ৰাপ্ত হন ; কিন্তু তাহার পিতা তাহাকে সে পদ গ্রহণ করিতে দেন নাই**। তিনি দর্শনের পরীক্ষায় একশত টাকা এবং সর্বোৎকৃষ্ট রচনা লিখিয়া আরও একশত টাকা পুরস্কার লাভ করিয়াছিলেন। কিন্তু পড়িবার কালে কলিকাতা বাসায় তাহাকে যেরূপ পরিশ্রম করিতে হইয়াছিল তাহা ভাবিলে, এখনকার প্রাসাদোপম অট্টালিকায় বিদ্যুতের পাখার নীচে অতি আরামে উপবিষ্ট কলিকাতার বিদ্যাখীমণ্ডলী হইতে র্তাহার বৈশিষ্ট্য বুঝিতে বিলম্ব হয়। না। বাসার সমস্ত রান্না বিদ্যাসাগরকেই সম্পন্ন করিতে হইত ; পিতাকে এবং কনিষ্ঠ ভ্রাতাকে খাওয়াইয়া, বাসন মজিয়া, ঘর ধুইয়া তবে তিনি নিজে খাইতে পাইতেন। দুই বেলাই এইৰূপ করিতে হইত। ইহার উপর যদি একটু কাজে ক্রটি ঘটিত, রাত্রে পড়বার সময় একটু ঢুলিয়া পড়িতেন, ঠাকুরদাস এমন প্রহার করিতেন যে, সিংহুদিগের লোকেরা ছুটিয়া আসিয়া বালককে রক্ষা করিতেন। এ দিকের ত এই দুৰ্দশা ; খাওয়ার অবস্থা ছিল