পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSR, বঙ্গ-গৌরব প্রতিষ্ঠিত। তিনি “ভারত সংস্কার সভা’ ১৮ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। সুলভ সাহিত্য-বিভাগ, স্ত্রীবিদ্যালয় বিভাগ, দাতব্য বিভাগ, শ্রমজীবীদের শিক্ষা বিভাগ এবং সুবাপান নিবারণী বিভাগ এই পাঁচভাগে সভার কার্যধারাকে বিভক্ত করা হইয়াছিল। এ সভা দেশের প্রভূত কল্যাণ সাধন করিয়াছিল। কেশবচন্দ্ৰ নীতিধর্ম সম্বন্ধে ছোট ছোট গ্রন্থ লিখিয়া বিনামূল্যে বিতরণ করিতেন। তখনকার উচ্ছঙ্খলতার দিনে তাহাতে সমাজের যথেষ্ট কল্যাণ সাধিত इष्ट्ब्लि । ১৮৮৩ অব্দের ৮ জানুয়ারি বহুমুত্ররোগে কেশবচন্দ্রের ধর্মময় ও কর্মময় জীবনের অবসান হয়। কিন্তু এ মৃত্যু তাহার লৌকিক মৃত্যু মাত্র। কাজের ভিতর দিয়াই তিনি অমর হইয়া আছেন। কেশবচন্দ্ৰ সমাজের বহুবিধা হিতসাধন করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু বাংলাদেশ তাহার একটি উপকার কখন বিস্মৃত হইতে পরিবে না। শিক্ষিত হিন্দু সমাজ তখনকার দিনে খ্রিস্টধর্মের দিকে যেরূপ আকৃষ্ট হইয়াছিল, তাহাতে হিন্দুসমাজের আশঙ্কার কারণ অল্প ছিল না। তিনি খ্রিস্টধর্মের এই প্রভাব হইতে দেশকে মুক্ত করিয়াছিলেন। খ্রিস্টান পাদরিদের সহিত তাহার জীবনে বহুবার বহুক্ষেত্রে সংঘর্ষ উপস্থাপিত হইয়াছিল। যুক্তি এবং তর্কে তিনি তাহাদিগকে প্রতিবারই পরাজিত করিয়া তখনকার ইংরেজি-শিক্ষিত হিন্দুদের মন হইতে খ্রিস্টান হইবার মোহ মুছিয়া ফেলিয়াছিলেন। শিক্ষিত-সমাজের ধর্মান্তর গ্রহণের আগ্রহ তীহার প্রভাব ও সংস্কারের ফলেই বন্ধু হইয়াছিল। কেশবচন্দ্ৰ নূতন ধর্মের প্রবর্তন করিলেও হিন্দু সমাজ এই জন্য চিরদিন তাহার কাছে কৃতজ্ঞ থাকিবে।