পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণদাস পাল R তিনি যদি ঐ “বন্দেমাতরম" ২৬ গানটি মাত্র লিখিয়া যাইতেন, তাহা হইলেও তঁহার নাম অমর হইয়া থাকিত। ১৩৩০ সালের ২৬ চৈত্র বঙ্গজননীর এই অমর সস্তান মরজগৎ পরিত্যাগ** করিয়াছেন। কিন্তু যতদিন বঙ্গসাহিত্য থাকিবে, ততদিন বঙ্কিমচন্দ্রের নাম স্বর্ণীক্ষরে বঙ্গ কৃষ্ণদাস পাল কলিকতা কঁসারিপাড়ায় ঈশ্বরচন্দ্ৰ পাল নামে এক ব্যক্তি বাস করিতেন। তিনি জাতিতে।তিলি ছিলেন। ঈশ্বরচন্দ্র সেকালের আর দশজন মধ্যবিত্ত লোকের মত সামান্য লেখাপড়া জানিতেন। তিলি জাতি তখন এবং এখনও ব্যবসায় বাণিজ্যেই নিযুক্ত থাকিতেন। পরের দাসত্ব করিবার প্রবৃত্তি র্তাহাদের পূর্বে মোটেই ছিলনা ; এখন কোনাে কোনো পরিবারে দাসত্ব বা পরের চাকুরির স্পাহা দেখা যাইতেছে। তখন তিলি জাতীয় ব্যক্তিরা কেহ কেহ বা বড় রকমের ব্যবসায়ে লিপ্ত হইতেন; যাহার অধিক মূলধন না থাকিত, তিনিও সামান্য মূলধন লইয়া ছোট-খাটাে ব্যবসায় আরম্ভ করিতেন। ঈশ্বরচন্দ্ৰ পালও এই রকম সামান্য মূলধন লইয়া একটি দোকান খোলেন। কিন্তু তঁহার মূলধন অর্থ হিসাবে সামান্য হইলেও আর এক দিকে অসীম ছিল— ঈশ্বরচন্দ্রের প্রধান মূলধন ছিল তঁহার সাধুতা। তিনি সামান্য দোকানদার ছিলেন বটে, কিন্তু অসামান্য ধর্মপরায়ণতা, সাধুতা ও বিনয়-নিম্ৰতা আঁহাকে আর একদিকে ধনী করিয়া রাখিয়াছিল। তাহারই পুরস্কারস্বরূপ তিনি এমন পুত্ররত্ন লাভ করিয়াছিলেন, যাঁহার নাম এখনও বাঙালি ভুলিতে পারে নাই। তিনি অসামান্য প্রতিভাশালী রায় কৃষ্ণদাস পাল বাহাদুর। ጳቕ ঈশ্বরচন্দ্ৰ পাল মহাশয়ের প্রথম পুত্ৰ অল্প বয়সেই মৃত্যুমুখে পতিত হন। তাহার পর ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে তাহার দ্বিতীয় পুত্র জন্মগ্রহণ করেন। এই দ্বিতীয় পুত্ৰই কৃষ্ণদাস। ঈশ্বরচন্দ্ৰ পাল মহাশয়ের আর কোনো সস্তান হয় নাই। পিতামাতার স্নেহ ও আদরে একমাত্র পুত্ৰ কৃষ্ণদাস বাল্যকালে কোনো অভাবই অনুভব সেইভাবেই বাল্যজীবন অতিবাহিত করেন। পাঁচ বৎসর বয়সের সময় তাহার যথারীতি হাতেখড়ি হয়। সামান্য দোকানদারের শিক্ষার জন্য সে সময়ে যে ব্যবস্থা ছিল, কৃষ্ণদাসের জন্যও সেই ব্যবস্থা হইয়াছিল ; ঈশ্বরচন্দ্ৰ মনেও করেন নাই যে, তঁহার পুত্রকে তিনি উচ্চ-শিক্ষিত করিবেন। পাঠশালায় পড়িয়া, হাতের লেখা ভাল করিয়া, হিসাবপত্রে