পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\se)8 বঙ্গ-গৌরব গিয়াছিলেন। তঁহার মৃত্যুর পর তঁহার জামাতা সালাউদ্দিন এই ইমামবাড়ির কিঞ্চিৎ উন্নতি বিধান করেন। কিন্তু সংস্কার অভাবে তাহা প্ৰায় ধ্বংসাবস্থা প্ৰাপ্ত হয়। এই ইমামবাড়ি যাহাতে বঙ্গদেশের মধ্যে একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠানরূপে সুপরিচিত হয়, তাহাই মহসীনের একান্ত ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সে ইচ্ছা তিনি তাহার জীবনকালে কার্যে পরিণত করিয়া যাইতে পারেন নাই। অবশেষে হুগলি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হইবার পর বহু অর্থব্যয়ে ইমামবাড়ির সংস্কার, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন আরম্ভ হয় এবং ইং ১৮৬১ অব্দে সেই অট্টালিকার সংস্কার কার্য শেষ হয়। এই ইমামবাড়ি নানাভাগে বিভক্ত। ইহার কোথাও ভজনালয়, কোথাও অতিথিশালা, কোথাও মুসাফিরখানা, কোথাও বা আতুরাশ্রম স্থাপিত হইয়া দেশবিদেশের কত লোকের ধর্মোপাসনা, আহার, আশ্রয় এবং পরিচর্য লাভের যে সুবিধা করিয়া দিয়াছে, তাহা বলিয়া বা লিখিয়া শেষ করা যায় না। এমন সুদৃশ্য, সুন্দর এবং কারুকার্যখচিত সুবৃহৎ অট্টালিকা সচরাচর দৃষ্টিগোচর হয় না। হুগলির ইমামবাড়ি নামে এই অট্টালিকা ইতিহাসে চিরপ্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছে। এতদব্যতীত হুগলির সুবৃহৎ দাতব্য চিকিৎসালয় এবং হাসপাতাল তীরই অর্থে প্রতিষ্ঠিত হইয়া দেশবাসীর অসীম উপকার সাধন করিতেছে। হাজি মহম্মদ মহসীন কেবলমাত্র মুসলমান সমাজের নহেন, সমগ্র বঙ্গদেশের পরম গীেরবের স্থল। সামান্য মানবরূপে জন্মগ্রহণ করিয়া নানা গুণের বিকাশে তিনি মহাপুরুষ নামে বিখ্যাত হইয়াছিলেন এবং আজও সমগ্ৰ মানবসমাজের ঐকান্তিক শ্রদ্ধা ও পূজার অর্ঘ্য লাভ করিতেছেন। তঁহার এই অসীম, যশ, অক্ষয় কীর্তি ও অমর নাম দেশের ইতিহাসে চিরকাল স্বর্ণীক্ষরে মুদ্রিত থাকিবে।