পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গ-গৌরব واه এবং কাজে তিনি অনেক চেষ্টা করিতেছেন। তাহার সমাজ সংস্কারের আগ্রহ দেখিয়া ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতায় “ভারতের জাতীয় সামাজিক সভা’র অধিবেশনে তঁহকেই সভাপতি মনোনীত করা হয়। প্রেসিডেন্সি কলেজ হইতে অবসর গ্রহণ করিবার পর হইতে প্ৰফুল্লচন্দ্ৰ কলিকাতার সেবী এবং সমাজসংস্কারক হিসাবে তাহার ক্ষমতার কথা আমরা জানি। কিন্তু তিনি যে একজন একনিষ্ঠ দেশসেবক, মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের সময়ে তাহার গবেষণার সঙ্গে সঙ্গে চরকা ও খদ্দর ব্ৰতে দীক্ষা গ্রহণ করিয়াছেন। এই বৃদ্ধ বয়সেও দেশে চরকা ও খন্দরের প্রসারের জন্য তিনি যে চেষ্টা ও পরিশ্রম করিতেছেন তাহার তুলনা হয় না। পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষিত হইয়াও প্রফুল্লচন্দ্ৰ তাহার আচার-ব্যবহার বা পোশাকপরিচ্ছদে জাতীয়তা বিসর্জন দেন নাই এবং চিরদিনই খাটি ভারতীয়ের মত সহজ সরল জীবন যাপন করিয়া আসিতেছেন। তিনি আজীবন কীেমাৰ্যব্ৰতাবলম্বী। তাহার উপার্জিত অর্থের প্রায় সমগ্র অংশই দরিদ্র ছাত্র, উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান, এবং দেশের দুঃস্থ ও নিপীড়িত জনগণের সাহায্যাৰ্থ ব্যয় হইতেছে। দেশের দুর্ভিক্ষে, বন্যায়, ঝড়ে বা যে কোন দৈবদুর্বপাকে যেখানেই যখন সাহায্যের আবশ্যক হইয়াছে, নিজের সঞ্চিত অর্থ ত তিনি মুক্তহস্তে ব্যয় করিয়াছেনই, দেশের লোকের নিকট নিপীড়িতদের সাহায্যের জন্য ভিক্ষার বুলি কঁধে লইয়া বেড়াইতেও দ্বিধা করেন নাই। প্ৰফুল্লচন্দ্রের মত এমন একজন মহাপ্ৰাণ দেশসেবক এবং ত্যাগী কৰ্মবীরকে পাইয়া বাংলাদেশ যে ধন্য হইয়াছে তাহাতে সন্দেহ নাই।