পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰফুল্লচন্দ্র রায় ዒ é প্ৰফুল্লচন্দ্ৰ যে কেবলমাত্র বিজ্ঞানের সাধনা করিয়াছেন এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানেরই স্থাপনা করিয়াছেন তাহা নহে, বাংলা সাহিত্যের প্রতিও তঁহার প্রচুর অনুরাগ আছে। এই জন্যই কুড়ি বৎসর পূর্বে প্রাদেশিক সাহিত্য সভার এক অধিবেশনে তাহাকে সভাপতি পদে বরণ করা হইয়াছিল। বাংলা সাময়িক পত্ৰাদিতেও তিনি বিস্তর প্রবন্ধ লিখেছেন এবং এখনও লিখিতেছেন।* ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে রসায়ন সংক্রান্ত একটি বিখ্যাত আবিষ্কার দ্বারা প্ৰফুল্লচন্দ্র বিশেষ যশ অর্জন করেন এবং বৈজ্ঞানিক জগতের নিকট সুপরিচিত হন। ইউরোপের বহু বিখ্যাত রাসায়নিক এই আবিষ্কারের জন্য তঁহাকে অভিনন্দন জানাইয়া অভ্যর্থনা করিয়াছিলেন। এবং অন্যান্য বিষয়ে অনেক গ্ৰন্থ রচনা করিয়াছেন। তন্মধ্যে “হিন্দু রসায়নের ইতিহাস”৫ তঁহার একখানি শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এই পুস্তকে তিনি সংস্কৃত গ্রন্থাদির সাহায্যে প্রমাণ করিয়া দেখাইয়াছেন যে, রসায়ন শাস্ত্ৰ অতি পূর্বকালেও ভারতবর্ষে বিদ্যমান ছিল এবং ত্ৰয়োদশ ও চতুর্দশ শতাব্দীতে এ সম্বন্ধে ইউরোপ অপেক্ষা ভারতবর্ষ অনেক বেশি অগ্রসর হইয়াছিল। দেশবিদেশে এই গ্ৰন্থখানি যথেষ্ট সমাদর এবং প্রশংসা লাভ করিয়াছে। গ্ৰন্থখানি তাহার পনেরো বৎসরের অক্লান্ত চেষ্টা এবং পরিশ্রমের ফল। প্ৰফুল্লচন্দ্রের গুণের পুরস্কার স্বরূপ ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে তাঁহাকে ডি. এস-সি উপাধি প্ৰদান করেন। কয়েক বৎসর পূর্বে ভারত গভর্নমেন্টও তাঁহাকে স্যার বা নাইট উপাধির দ্বারা সম্মানিত করিয়াছেন। প্ৰফুল্লচন্দ্ৰ পচিশ বৎসরের উধ্বকাল অধ্যাপকের কাজ করিয়া বহু সংখ্যক ছাত্রের সংস্পর্শে আসিয়াছেন। তাঁহাদের নিকট হইতে যে পূজা ও সম্মান তিনি লাভ করিয়াছেন, সচরাচর কোন শিক্ষকের ভাগ্যে সেরাপ ঘটিতে দেখা যায় না। ছাত্রদের লইয়াই তেঁাহার জীবনের বেশির ভাগ কাটিয়া গিয়াছে। ছাত্রে এবং পুত্রে তাহার কাছে কোন ভেদ নাই বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। সুতরাং তাঁহাদের নিকট হইতে যে তিনি অকৃত্রিম শ্ৰদ্ধা ও ভক্তি লাভ করিবেন, তাহাতে বিস্মিত হইবার কারণ নাই। ছাত্রের শক্তি বা গুণ কখনও প্ৰফুল্লচন্দ্রের তীক্ষ দৃষ্টি অতিক্রম করিতে পারে নাই। যে ছাত্রের ভিতর যখনই তিনি শক্তির পরিচয় পাইয়াছেন, তখনই তাহাকে তিনি গবেষণা কার্যে অংশ গ্রহণ করিবার জন্য আপনার কাছে টানিয়া আনিয়াছেন। তঁহার মত শক্তিশালী বৈজ্ঞানিকের সাহায্যে অনেক ছাত্রের প্রতিভা অদ্ভুত ভাবে খুলিয়া গিয়াছে। তাঁহায় শিষ্যদের লইয়া বর্তমানে এদেশে যে রাসায়নিক সঙ্ঘটি গড়িয়া উঠিয়াছে তাহার শক্তিও আজ কম নহে। বিজ্ঞানচর্চা এবং সাহিত্যসেবা ছাড়া প্ৰফুল্লচন্দ্ৰ সমাজ সংস্কারেও বিশেষ মনোনিবেশ করিতেছেন। স্পশ্যাম্পৃশ্যভেদ প্রভৃতি সামাজিক কুসংস্কারগুলি দূর করিবার জন্য কথায়

  • 空吋一>必.心.>>88