তখন সুরেন্দ্রনাথের মনে হইল, এ সংসারে একটু পরিবর্ত্তন ঘঢিয়াছে। গরম বোধ হইলে, তবে লোকে পাখার সন্ধান করে। সুরেন্দ্রনাথ পুস্তক হইতে মুখ তুলিয়া কহিল,—
“প্রমীলা, বড়দিদি এখানে নাই, না?”
সে বলিল, “দিদি কাশী গিয়াছেন।”
“তাই ত!”
দিন দুই পরে হঠাৎ প্রমীলার পানে চাহিয়া সে কহিল, “বড়দিদি কবে আসিবেন?”
“একমাস পরে!”
সুরেন্দ্রনাথ পুস্তকে মনোযোগ করিল। আরও পাঁচ দিন অতিবাহিত হইল। সুরেন্দ্রনাথ পেন্সিলটা পুস্তকের উপর রাখিয়া দিয়া কহিল, “প্রমীলা, একমাসের আর কত বাকি?” “অনেক দিন।” পেন্সিল তুলিয়া লইয়া সুরেন্দ্র চশমা খুলিয়া কাচ দুইটা পরিষ্কার করিল। তাহার পর চক্ষে দিয়া পুস্তকের পানে চাহিয়া রহিল।
পরদিন কহিল, “প্রমীলা, বড়দিদিকে তুমি চিঠি লেখ না?”
“লিখি বই কি!”
“তাড়াতাড়ি আস্তে লেখনি?”
“না।” সুরেন্দ্রনাথ ক্ষুদ্র একটি নিঃশ্বাস ফেলিয়া ধীরে ধীরে বলিল, “তাই ত।”
প্রমীলা বলিল, “মাষ্টার-মশায়, বড়দিদি এলে বেশ হয়, না?”
“বেশ হয়।”
“আস্তে লিখে দেবো?”