নহে। অতএব তুমি মনোভ্রমে ভাল্লুককে কখন বিশ্বাস করিও না। এ নিদ্রা হইতে উঠিয়া তোমাকে ভক্ষণ করিবে, এ কথা আমাকে এখনি বলিতেছিল, অতএব তাহা না হইতেই তুমি ঐ ঋক্ষকে বৃক্ষ হইতে ফেলিয়া দাও, আমি উহাকে ভক্ষণ করিয়া প্রস্থান করি, তাহার পরে তুমিও স্বচ্ছন্দে গৃহে গমন করিবে। রাজপুত্র ব্যাঘ্রের কথা শুনিয়া ভাবিলেন একথা সত্যই হইবে। অতএব ভূত ভবিষ্যৎ বিবেচনা না করিয়া তখনি ভালককে ঠেলা মারিলেন, কিন্তু তাহাতে তাহার নিদ্রা ভঙ্গ হওয়াতে দুই হস্তে বৃক্ষশাখা ধরিয়া রহিল নীচে পড়িল না। পরে সে রাজপুত্রকে কহিল অরে পাপিষ্ঠ তোমার বাক্যে বিশ্বাস করিয়া আমি তোমার প্রাণ রক্ষা করিলাম, কিন্তু তুমি অজ্ঞানের ন্যায় আপন সত্য পালন না করিয়া আমার প্রাণ নাশে উদ্যত হইয়া ছিলে, কালের বিচিত্র গতি। আমি যদি এখন তোমাকে ধরিয়া আহার করি তবে তোমাকে কে রক্ষা করে। এই কথায় রাজপুত্র কাষ্ঠবৎ হইলেন, এবং মনে করিলেন ভালুক এখনি আমাকে নষ্ট করিবে। কিন্তু সে তাহা করিলনা। রাত্রি প্রভাত হইলে ব্যাঘ্র তথা হইতে প্রস্থান করিল। ঋক্ষ তখন রাজপুত্রের কর্ণমূলে মূত্রত্যাগ করিয়া দিল, আর বলিল তোমার প্রাণবধ করিলে কি হইবে, তোমার রক্ষাকর্তা কেহই নাই, অতএব তোমাকে ছাড়িয়া দিলাম ইহা বলিয়া ভাল্লুক প্রস্থান করিল।
পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/১১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চদশ পুত্তলিকা
১০৭