পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পুত্তলিকা।
৩৭

 অবন্তী নগরে এক বিচক্ষণ রাজপুরােহিত ছিলেন। তাহার এক পুত্র ছিল, সে বিদ্যাভ্যাস করিত না, দিবারাত্র কেবল সুখাভিলাষে মত্ত থাকিত, তাহাতে ব্রাহ্মণ সতত অসুখী থাকিতেন। এক দিবস তিনি পুত্রকে নিকটে ডাকিয়া কহিতে লাগিলেন, হে পুত্র মনুষ্য হইলে মনুষ্যের উপকার করিতে হয়, পরমেশ্বর এই জন্য মনুষ্যকে জ্ঞান দান করিয়াছেন, এই জ্ঞানের নিমিত্তই মনুষ্যজাতি পশুজাতি অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, এই জ্ঞান বিদ্যা দ্বারা উজ্জ্বল হয়। বিদ্যা না থাকিলে মনুষ্যে ও বন্য পশুতে কিছুমাত্র প্রভেদ থাকে না। বিদ্যা মনুষ্যের ভূষণ, বিদ্বান ব্যক্তি রাজা অপেক্ষাও অধিক সমাদর ও সম্মানের পাত্র, কেননা রাজা কেবল স্বদেশে পূজনীয়, বিদ্বান কি স্বদেশে কি বিদেশে সর্বত্রই পূজনীয়। বিদ্যা অর্থ অপেক্ষাও উৎকৃষ্ট পদার্থ, যেহেতু অর্থের অরি আছে, তাহা তস্কর কর্তৃক অপহৃত ও অগ্নি দ্বারা নষ্ট হইতে পারে। বিদ্যা সেপ্রকার নষ্ট হইতে পারেনা, বিদ্যা অক্ষয় ধন, বিতরণে বৃদ্ধি হয়। অপর ধন চিরস্থায়ী ও একত্র-স্থায়ী নহে, কিন্তু বিদ্যাধন কখন স্থান-ভ্রষ্ট হয় না। বিদ্যা সকল ভূষণ হইতে অধিক শােভাকর। রত্নাদি ভূষণ শৈশব ও যৌবন কালে শােভা-কারী বটে, কিন্তু বৃদ্ধাবস্থায় শােভা-জনক নহে। বিদ্যা সকল অবস্থায় সমান শােভাকারী, বিশেষতঃ বৃদ্ধাবস্থায় আরাে সুখ-দায়ক হয়, এবং সকল সময়ে পরম বন্ধুর কর্ম্ম করে। বিদ্যার তুল্য অমূল্য রত্ন পৃথি-

8