পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যনে-পাহাড়ে আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলুম আসবার সময় পথের ধারে যে সব শৈলমালা দেখে এসেচি, ওদের মধ্যে কোনোটার ওপর বসে নিক'পিক-কিংবা নিক'পিকই হয়ে গেল ঠিক। আমাদের মধ্যে তর্ক বাধলে । কেউ বলে, “এই পাহাড়টা ভালো-” কেউ বলে, “ওটা ভালো” । অবশেষে বন্ধুবর পরেশ সান্ন্যাল একটি পাহাড় দেখিয়ে বল্লেন, দেখুন এটাই সব চেয়ে ভাল হবে । বড় সুন্দর পাহাড়টি, বড় চমৎকার সেই বিস্তৃত প্ৰান্তর-ঠিক যেন ফিল্মে দেখা আরিজোনার সেই ‘পেইন্টেড ডেজার্ট”। তখন বেলা পড়ে এসেচে। আমরা অনুচ্চ পাহাড়টিতে উঠলাম, ওর সমতল শিখরদেশে আমরা সতরঞ্চি পেতে বসলাম । আমাদের চারিদিকে অনুচ্চ, রুক্ষ, অনুর্বর অসংখ্য পাহাড়-নানা আকৃতির, নানা ধরণের। কোনোটার আকার পিরামিডের মত, কোনোটার বা মন্দিরের মত, কোনোটা নৰ্ম্মান কাসল-এর মত, কোনোটা বিরাটকায় শিবলিঙ্গের মত, কোনােটা গম্বুজাকৃতি। কোনোটার রং কালো, কোনোটা মেটে সিঁদুরের মত রাঙা, কোনোটা ধূসব, কোনোট ঝকঝকে মিছরির মত সাদা কোয়ার্জ পাথরের। প্ৰত্যাসন্ন শীতের অপরাহ্রের রাঙা রোদ কোনো কোনোটার মাথায়। হু হু ঠাণ্ডা হাওয়া বইচে খড়কাই নদীর দিক থেকে। পশ্চিমে বহুদূরে দিকচক্রবালের অনেকটা জুড়ে সুদীর্ঘ বরকেলা পাহাড়শ্রেণী, তারই পেছনে এখন টকটকে রাঙা সূৰ্য্যটা অস্ত যাচ্চে। চারিপাশের সেই সব অদ্ভুত-দর্শন পাহাড় দেখে মনে হয় আমেরিকার কোনো ছন্নছাড়া মরুভূমিব মধ্যে যেন বসে spaceএর সমুদ্রে ডুবে আছি, থৈ থৈ spaceএর সমুদ্র, কুলকিমারা 6थीं। ये भी । মনে হয় কলকাতার সরু এদে গলির মধ্যে আলোবাতাস শুন্য একতালা ঘরে যারা বাস করে, দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, যারা সূৰ্য্যাস্ত দেখবার সুযোগ পায় না, মুক্তরূপ ধরণীর সৌন্দৰ্য্য, প্রসারিতা,