পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনে-পাহাড়ে y অপরাহুের ছায়া-নেমে-আসা বিরাট প্ৰান্তরের ছবি যারা কখনো দেখেনি, নির্জন পাহাড়ের সমতল শিলাসনে বসে দূরের গিরিমালার দিকে চেয়ে থাকেনি কখনো যারা, তাদের নিয়ে আসি, তাদের সব দেখাই। এখন অনেক গরীব গৃহস্থের কথা আমার মনে হয় এই সব মুক্ত স্থানে বসলেই। আমি জানি তাদের, কি ভাবে তারা থাকে। ওদেরই মধ্যে একটি বধু আমাকে বলেছিল--দাদা, তারকেশ্বর কোন দিকে ? -C3a -সেখানে একবার যেতে ইচ্ছে করে - --গেলেই হয়। বেশি দূর তো নয়। --তাই তো দাদা, পয়সায় যে কুলোয় না। উনি যা পান. তাতে এই ঘরভাড়া দিয়ে খেয়ে দেয়ে কি থাকে বলুন। কতদিন থেকে डीब5ि -এই বাসায় কতদিন আছ তোমরা ? -হয়ে গেল সাত বছর। আমার ঐ খুঁকির বয়েস, দাদা। -কোথাও যাওনি এই সাত বছরের মধ্যে ? -হ্যা, যাচ্চি-কোথায় যাবো ? আপনি পাগল ! পয়সা কোথায় ? যখন কোথাও যাই, কোনো ভাল জিনিস দেখি, তখন আমার দূর সম্পর্কের আত্মীয়া সেই বধূটর কথা মনে পড়ে। পরেশ বাবু একটা গল্প জুড়ে দিলেন। আমরা খাবারের হাড়ি খুলে শালপাতায় খাবার ভাগ করে দিতে থাকি। তারপর সবাই খাই, আর চারিদিকে চাই । এ ঠিক আরিজোনার মরুভূমি, নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় এখুনি দূরে কোথাও কোয়োটু ডেকে উঠবে, যার ছন্নছাড়া চীৎকার শুনলে নির্জন মরুপ্ৰান্তরে অতি বড় সাহসী পথিকেরও হৃদিকম্প উপস্থিত হয়। সেই পাহাড়'লাণ্ড আমরা বসে রইলুম সন্ধ্যার একপ্রহর পর। পৰ্যন্ত । হাসি গল্পে সময় কাটলো ।