পাতা:বর্ত্তমান জগৎ - প্রথম ভাগ.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিশরের পথে- মানব ও প্ৰকৃতি S\, যে জিনিষকে মাপিয়া গণিয়া ওজন করিয়া ফেলা যায় তাহার সীমা ও গণ্ডী নির্দিষ্ট হইয়া পড়ে। জাহাজে থাকিতে থাকিতে সমুদ্র আর অসীম অনন্ত ইত্যাদি বোধ হইতেছে না। যেন একটা বড় নদী বা পুষ্করিণীর উপর দিয়া নৌকা চালাইয়া যাইতেছি । সমুদ্র আমাদের এতই স্ববশি হইয়াছে যে ইহার গাম্ভীৰ্য্য, উদারতা, বিস্তৃতি ইত্যাদি কিছুই এখন রহস্যজনক মনে হয় না। প্ৰকৃতিকে বাধাবাধির মধ্যে আনিয়া । কাবু করিতে পারিলে মানুষ আর ইহাকে ভয় করিবে কেন ? সম্মান করিবে: কেন ? পূজা করিবে কেন ? জগতের শক্তিগুলিকে এই উপায়ে মানুষ একে একে নিজ করতলগত করিতেছে--নিজ জীবনের নানাবিধ কাজে লাগাইতেছে । এইগুলি ব্যবহার করিয়া নিজ জীবনের অভাবমোচন করিতেছে। প্ৰকৃতির উপর মানবের আধিপত্য বিস্তারই সভ্যতার ইতিহাসের একমাত্র তথ্য । 啡 মানুষ ত বিশ্বশক্তিগুলি ক্ৰমশঃ দখল করিয়া ফেলিতেছে । প্ৰকৃতি তাহার বুদ্ধিশক্তির নিকট দাসের ন্যায় আজ্ঞা পালন করিতেছে। তাহা হইলে মানুষ নিজকে খর্ব করিবে কাহার নিকট ?-মাথা নোয়াইতে শিখিবে কাহার নিকট ? পূজা করিবে ভক্তি করিবে কাহাকে ? মানুষ সংসারের কিছুই ত নিজ অপেক্ষা মহত্তর, বিশালতার, বিস্তৃততর দেখিতে পায় না ! তাহার দৃষ্টিতে সবই যে ক্ষুদ্র, হীন, নীচ, পঙ্গু। আজ সংসারের যে জিনিষকে তুমি বড় বা অসীম মনে করিতেছি, কাল তাহাই তোমার চোখে আতি ক্ষুদ্র ও নগণ্য বোধ হইবে। দুই হাজার বৎসর পূর্বে তুমি যাহার নিকট মাথা অবনত করিয়াছিলে আজ সেই সকল পদার্থ তোমার নিকট একেবারেই শ্ৰদ্ধার পাত্র নয়। আজ যে বস্তু দেখিয়া তুমি ভীত সন্ত্রস্ত হইতেছ। কয়েক বৎসরের সাধনায়ই হয় তা তাহা তোমার করা মলকবৎ খেলার সামগ্রীতে পরিণত হইবে।