পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
বহুবিবাহ।

আহ্লাদে গদ্গদ হইলাম। আমার চক্ষুতে জলধারা বহিতে লাগিল। তিনি যথোচিত যত্ন করিতে লাগিলেন। কিন্তু, উহার বাটীর স্ত্রীলোকেরা সেরূপ নহেন। এ আপদ আবার কোথা হইতে উপস্থিত হইল এই বলিয়া, তাহারা, যার পর নাই, অনাদর ও অপমান করিতে লাগিল। সপত্নীপুত্র ক্রমে ক্রমে সবিশেষ সমস্ত অবগত হইলেন। কিন্তু তাহাদের অত্যাচার নিবারণ করিতে পারিলেন না। এক দিন, আমি তাঁহার নিকটে গিয়া সমুদয় বলিলাম। তিনি কহিলেন, মা আমি সমস্ত জানিতে পারিয়াছি; কিন্তু কোনও উপায় দেখিতেছি না। আপনারা কোনও স্থানে গিয়া খাকুন; মধ্যে মধ্যে, আমার নিকট লোক পাঠাইবেন; আমি আপনাদিগকে কিছু কিছু দিব।

 এই রূপে নিরাশ্বাস হইয়া, কন্যা লইয়া, তথা হইতে বহির্গত হইলাম। পৃথিবী অন্ধকারময় বোধ হইতে লাগিল। অবশেষে ভাবিলাম, স্বামী বর্ত্তমান আছেন, তাঁহার নিকটে যাই, এবং দুরবস্থা জানাই, যদি তাঁহার দয়া হয়। এই স্থির করিয়া, পাঁচ সাত দিন হইল, এখানে আসিয়াছিলাম। আজ তিনি স্পষ্ট জবাব দিলেন, আমি তোমাদিগকে এখানে রাখিতে, ৰা অন্ন বস্ত্র দিতে পারিব না। অনেকে বলিল, তোমায় জানাইলে কোনও উপায় হইতে পারে, এ জন্য এখানে আসিয়া বসিয়া ছিলাম। ঐ ব্যক্তি শুনিয়া ক্রোধে ও দুঃখে অতিশয় অভিভূত হইলেন, এবং অশ্রুপাত করিতে লাগিলেন। কিয়ৎ ক্ষণ পরে, তিনি, ভট্টরাজের বাটীতে গিয়া, যথোচিত ভর্ৎসনা করিয়া বলিলেন, আপনার আচরণ দেখিয়া আমি চমৎকৃত হইয়াছি। আপনি কোন্ বিবেচনায় তাহাদিগকে বাটী হইতে বহিস্কৃত করিয়া দিতেছেন। এক্ষণে, আপনি তাহাদিগকে বাটীতে রাখিবেন কি না, স্পষ্ট বলুন। ঐ ব্যক্তির ভাবভঙ্গী দেখিয়া, বৃত্তিভোগী ভট্টরাজ ভয় পাইলেন, এবং কহিলেন, তুমি বাটীতে যাও, আমি ঘরে বুঝিয়া পরে তোমার নিকটে যাইতেছি।