পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
৭৫

বিবাহসূত্রে স্বদেশের যে মহতী দুরবস্থা ঘটিয়াছে, তদ্দর্শনে তাঁহারা দুঃখিত হইয়াছেন, এবং সেই দুরবস্থা বিমোচনের উপায়ান্তর না দেখিয়া, রাজদ্বারে আবেদন করিয়াছেন। স্বদেশের ও স্বসম্প্রদায়ের দুরবস্থা বিমোচন মাত্র তাঁহাদের উদ্দেশ্য। যদি গবর্ণমেণ্ট সদয় হইয়া তাঁহাদের আবেদন গ্রাহ্য করিয়া, এ দেশের হিন্দুসম্প্রদায়ের বিবাহবিষয়ে কোনও ব্যবস্থা বিধিবদ্ধ করেন, তাহাতে এ প্রদেশের মুসলমানসম্প্রদায়, অথবা ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রদেশের হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়, অসন্তুষ্ট হইবেন কেন। এ দেশের হিন্দুসম্প্রদায় গবর্ণমেণ্টের প্রজা। তাহাদের সমাজে কোনও বিষয় নিরতিশয় ক্লেশকর হইয়া উঠিয়াছে। তাঁহাদের যত্নে ও ক্ষমতায় সে ক্লেশের নিবারণ হইতে পারে না। অথচ সে ক্লেশের নিবারণ হওয়া নিতান্ত আবশ্যক। প্রজারা, নিরুপায় হইয়া, রাজার আশ্রয়গ্রহণপূর্বক সহায়তা প্রার্থনা করিয়াছে। এমন স্থলে, প্রজার প্রার্থনা পরিপূরণকরা রাজার অবশ্যকর্ত্তব্য। এক প্রদেশের প্রজাবর্গের প্রার্থনা অনুসারে, তাহদের হিতার্থে কেবল সেই প্রদেশের জন্য, কোনও ব্যবস্থা বিধিবদ্ধ করিলে, হয়ত প্রদেশান্তরীয় প্রজারা অসন্তুষ্ট হইবেক, এই আশঙ্কা করিয়া তদ্বিষয়ে বৈমুখ্য অবলম্বন করা রাজধর্ম্ম নহে।

 এরূপ প্রবাদ আছে, ভারতবর্ষের ভূতপূর্ব গবর্ণর জেনেরেল মহাত্মা লার্ড বেণ্টিক, অতি নৃশংস সহগমনপ্রথা রহিত করিবার নিমিত্ত, কৃভসঙ্কল্প হইয়া, প্রধান প্রধান রাজপুরুষদিগকে পরামর্শ জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন। তাঁহারা সকলেই স্পষ্ট বাক্যে কহিয়াছিলেন, এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিলে, ভারতবর্ষের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যস্ত, যাবতীয় লোক যৎপরোনাস্তি অসন্তুষ্ট হইবেক, অবিলম্বে রাজবিদ্রোহে অভুথান করবেক। মহামতি মহাসত্ত্ব গবর্নর জেনেরেল, এই সকল কথা শুনিয়া, ভীত বা হতোৎসাহ না হইয়া কহিলেন, যদি এই প্রথা রহিত করিয়া এক দিন আমাদের রাজ্য থাকে, তোহা হইলেও ইরেজজাতির নামের,যথার্থ গেরিব ও রাজ্যাধিকারের