পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
বহুবিবাহ।

হয়, তবে তাহার ফললাভের নিমিত্ত বিবাহ করিবেক, ইহা ভঙ্গিক্রমে উক্ত হইয়াছে। ধর্ম্ম ও প্রজা এই বিশেষণবশতঃ, রতিকামনামুলক বিবাহ সে সময়ে করিতে পারে, ইহা প্রতীয়মান হইতেছে, নতুবা ধর্ম্ম ও প্রজা এ কথা বলিতেন না। ঋণত্রয় শোধনের নিমিত্ত উপযোগিতা না থাকাতে, সে ফলের উদ্দেশে আর বিবাহ করিবেক না, ইহা সিদ্ধ হইতেছে। “অন্যতরের অভাবে অর্থাৎ ধর্ম্ম ও পুত্রের মধ্যে একের অভাব ঘটিলে, অন্য স্ত্রী বিবাহ করিয়া তাহার সহিত অয়্যাধান করিবেক”। অতএব মনু দ্বিতীয় বিবাহের স্ত্রী- বিয়োগরূপ যে কাল নির্দ্দেশ করিয়াছেন, ধর্ম্ম ও পুত্রের মধ্যে একের অভাবস্থলেই তাহা অভিপ্রিত; নতুবা স্ত্রীবিয়োগ হইলেই পুনরায় বিবাহ করিবেক, এরূপ তাৎপর্য্য নহে। মনুবচন দ্বারা স্ত্রীবিয়োগ হইলে পুনরায় বিবাহ করিবার যে অধিকার হইয়াছিল, “যাহার প্রাপ্তি থাকে তাহার নিষেধ হয়", এই ন্যায় অনুসারে, ধর্ম্ম ও পুত্র সম্পন্ন হইলে, সেই অধিকারের নিষেধ হইতেছে। মনুবচনের অবকাশবিশেষদানের নিমিত্ত, বৌধায়নবচনের উত্তরার্দ্ধ আরব্ধ হইয়াছে। অতএব পূৰ্বার্দ্ধমাত্র ধরিয়া, উত্তরার্দ্ধের গোপন করিয়া, “যে স্ত্রীর সহযোগে ধর্ম্মকার্য্য ও পুত্রলাভ সম্পন্ন হয়, তৎসত্ত্বেও অন্য স্ত্রী বিবাহ করিবেক না”, এই রূপে তাদৃশী স্ত্রী সত্ত্বেও সে দারান্তর পরিগ্রহ নিষেধ কল্পনা, তাহা অতীব যুক্তিবিরুদ্ধ; যদি তাঁহার মতে দার সত্ত্বেও দারান্তর পরিগ্রহের প্রাপ্তিসম্ভাবনা থাকিত, তাহা হইলে তাহার নিষেধ হইতে পারত। পূর্ব্ববৎ অগ্ন্যাধান করবেক এই কথা বলাতে, এ বচন সব-বিবাহবিষয়ক হইতেছে, সুতরাং উহা কামার্থ বিবাহবিষয়অক হইতে পারেনা; কারণ, তাঁহার মতে কামার্থ বিবাহ কেবল অসবর্ণাবিষয়ক। কিঞ্চ, ধর্ম্মপ্রজাসম্পয়ে এই কথা বলাতে, এই নিষেধ ধর্ম্মার্থ ও পুত্রার্থ বিবাহবিষয়ক বলিয়া বোধ হইতেছে; সুতরাং কামার্থবিষয়ক বলিয়া কল্পনা করাও যুক্তিবিরুদ্ধ; কারণ, ঐ দুই পদের বৈষর্থ্য ঘটে; উভয় ফলের __দ্ধ হইলে, দারসত্ত্বেও দারান্তর পরিগ্রহ নিষেধ করিয়া, উভয়ের মধ্যে একের অভাব ঘটিলে, ধর্ম্মের অভাবে অথবা পুত্রের অভাবে, দারসত্ত্বেও দরান্তর পরিগ্রহ এক বিবাহবাদীর মতে কিরূপে সঙ্গত হইতে পারে। তাঁহার মতে পুত্রের অভাবে দারসত্ত্বেও দারান্তর পরিগ্রহ বিহিত হইলেও, অগ্নিহোত্রাদি সমস্ত কর্ত্তব্য ধর্ম্মের অভাবেও, পুত্রসত্ত্বে দারান্তর পরিগ্রহ নিষিদ্ধ হইয়াছে। অতএব, “অদারে” এইরূপ পদচ্ছেদ দ্বারাই সর্ব্বসামঞ্জস্য হইতেছে; এমন স্থলে “দ্বারাক্ষতলাজানা_ বহুত্বঞ্চ” পুংলিঙ্গাধিকারে পাণিনিকৃত এই