পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
১৮৯

 নিষেধ বিধির কল্পনা করিয়াছেন, কিন্তু কি আশ্চর্য! এই
 বিধিটি কি নিয়ামক হইতে পারে না? ইহা দ্বারা কি অর্থে
 সবর্ণাবিবাহই কর্তব্য ও অনুলোমবিবাহই কর্ত্তব্য এই দুইটি
 নিয়ম বিধিবদ্ধ হইতেছে না? অসবর্ণাৰিবাহ করিতে ইচ্ছা হইলে
 প্রথমে সবর্ণবিবাহ করিতেই হইবে এবং পরে যথাযথ হীনবর্ণা
 বিবাহ করিবে এইটি কি ঐ বিধির প্রকৃত ভাব নহে?(৩}।”

[১]

এ স্থলে বক্তব্য এই যে, তর্কবাচস্পতিপ্রকরণের প্রথম পরিচ্ছেদে প্রতিপাদিত হইয়াছে, মনুবচনোক্ত বিবাহবিধিকে অপূর্ব্ববিধিই বল, নিয়মবিধিই বল, পরিসংখ্যাবিধিই বল, আমার পক্ষে তিনই সমান; তবে পরিসংখ্যার প্রকৃত স্থল বলিয়া বোধ হওয়াতেই, পরিসংখ্যাপক্ষ অবলম্বিত হইয়াছিল (৪)।[২] অতএব, যদি সামশ্রমী মহাশয়ের পরিসংখ্যায় নিতান্ত অরুচি থাকে; এবং এই বিবাহবিধিকে নিয়মবিধি বলিয়া স্বীকার করিলে, তাঁহার সন্তান জন্মে, তাহা হইলে আমি তাহাতেই সম্মত হইতেছি; আর, নিয়মবিধি স্বীকার করিয়া তিনি প্রথমে যে ব্যবস্থা করিয়াছেন, তাহাও অঙ্গীকার করিয়া লইতেছি। তাঁহার ব্যবস্থা এই; “ইহা দ্বারা কি অগ্রে সবর্ণাবিবাহ কর্তব্য ও অনুলোমবিবাহই কর্তব্য এই দুইটি নিয়ম বিধিবদ্ধ হইতেছে না?”। পূর্ব্বে দর্শিত হইয়াছে, মনুবচনের পূর্ব্বার্দ্ধ দ্বারা “অগ্রে সবর্ণাবিবাহ কর্তব্য” এই অর্থই প্রতিপন্ন হয়; আর, “অনুলোমবিবাহই কর্তব্য” অর্থাৎ কামবশতঃ বিবাহ করিতে ইচ্ছা হইলে, অনুলোমক্রমে অসবর্ণাবিবাহ কর্তব্য; মনু- বচনের উত্তরার্দ্ধ দ্বারা এই অর্থই প্রতিপন্ন হয়। অতএব, যদি সামশ্রমী মহাশয়ের ঐ মীমাংসার এইরূপ তাৎপর্য্য হয়, তাহা হইলে তদীয় ঐ মীমাংসায় কোনও আপত্তি নাই; কারণ, নিয়মবিধি অবলম্বিত হইলে,

 সবর্ণাগ্রে দ্বিজাতীনাং প্রশস্তা দারকর্ম্মণি।

  1. বহুবিবাহবিচারসমালোচনা ২ পৃষ্ঠা।}}
  2. এই পুস্তকের ৩৯ পৃঃ ১৮ পঁক্তি হইতে ৪১ পৃষ্ঠা পর্য্যন্ত দেখ।