পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯২
বহুবিবাহ।

গণ্য হইবেক; এ কথা বলিলে, সে ব্যক্তির বর্তমান সকল স্ত্রীই পুত্ত্রহীনা, ইহাই প্রতিপন্ন হয়। বস্তুতঃ, পুল্লহীন স্ত্রীসমূহের বিষয়েই এই ব্যবস্থা প্রদত্ত হইয়াছে। অতএব, “পুত্ত্রবতী স্ত্রী সত্ত্বেও বিবাহ প্রতিপন্ন হইতেছে”, সামশ্রমী মহাশয়ের এই সিদ্ধান্ত বচনের অর্থ দ্বারা সমর্থিত হইতেছে না। “সপত্নীদের মধ্যে যদি কেহ পুত্ত্রবতী হয়,” এ স্থলে “যদি হয়” এরূপ সংশয়াত্মক নির্দেশ না থাকিয়া, “সপত্নীদের মধ্যে এক জন পুত্ত্রবতী", যদি এরূপ নিশ্চয়াত্মক নির্দ্দেশ থাকিত, তাহা হইলেও বরং পুত্ত্রবতী স্ত্রী সত্ত্বে বিবাহ করিয়াছে, এরূপ অনুমান কথঞ্চিৎ সম্ভব হইতে পারিত। আর, যদি কোনও ব্যক্তি পূর্ব্ব পূর্ব্ব স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব আশঙ্কা করিয়া ক্রমে ক্রমে বহু বিবাহ করিয়া থাকে, সে স্থলে “শেষপত্নীই পুত্ত্রিণী সুস্থিরই রহিয়াছে,” কেন, বুঝিতে পারা যায় না। সামশ্রমী মহাশয় সিদ্ধান্ত করিয়া রাখিয়াছেন, যখন পূর্ব্ব পূর্ব্ব স্ত্রীকে বন্ধ্যা স্থির করিয়া পুনরায় বিবাহ করিয়াছে, তখন কনিষ্ঠা স্ত্রীরই সন্তান হওয়া সম্ভব, পূর্ব্ব পূর্ব্ব স্ত্রীদিগের আর সন্তান হইবার সম্ভাবনা কি। কিন্তু ইহা অদৃষ্টচর ও অশ্রুতপূর্ব্ব নহে যে, পূর্ব্বস্ত্রীকে বন্ধ্যা স্থির করিয়া পুত্ত্রার্থে পুনরায় বিবাহ করিলে পর, কোনও কোন ও স্থলে পূর্ব্বাস্ত্রীর সন্তান হইয়াছে, কোনও কোনও স্থলে উভয় স্ত্রীর সন্তান হইয়াছে; কোনও কোনও স্থলে উভয়েই গর্ভধারণে অসমর্থ হইয়াছে। অতএব “শেষপত্নীই পুত্ত্রিণী সুস্থিরই রহিয়াছে,” এই সিদ্ধান্ত নিতান্ত অনভিজ্ঞতামুলক, তাহার সংশয় নাই।

 সামশ্রমী মহাশয়ের তৃতীয় আপত্তি এই;–

 পূর্ব্বোক্ত প্রকারে শাস্ত্ররূপ প্রমাণ প্রদর্শন করিয়া, পূর্ব্বকালীন রাজাদিগের যদৃচ্ছাকৃত বহুবিবাহ দৃষ্টান্ত দর্শাইয়া, তিনি যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহব্যবহারের সমর্থনের নিমিত্ত লিথিয়াছেন,