পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০২
বহুবিবাহ।

লোকবেদবিরুদ্ধ এই অধর্ম্ম করিও না, কেন তোমার এমন বুদ্ধি হইল। ২৭।

 এই অখ্যানটি পূর্ব্বোল্লিখিত শ্রুতিটির সাক্ষাৎ উদাহরণস্বরূপ। সহৃদয় মহোদয়গণ! নিষ্পক্ষান্তঃকরণে দেখিবেন, এই উপাখ্যানটিতে কি বিবাহান্তরে পত্নীর বন্ধ্যাত্বের বা অসবর্ণাত্বের অপেক্ষা আছে বলিয়া বোধ হয়? পুরুষের বহুবিবাহ কি শাস্ত্রনিষিদ্ধ?”[১]

“এই আখ্যানটি পুর্ব্বোল্লিখিত শ্রুতিটির সাক্ষাৎ উদাহরণস্বরূপ”। এ স্থলে সামশ্রমী মহাশয়কে জিজ্ঞাসা করি, আখ্যানটির একদেশমাত্র উদ্ধৃত না করিয়া, সমুদয় আখ্যাটি উদ্ধৃত করিলে, তিনি এরূপ নির্দ্দেশ করিতে পারিতেন কি না। তাঁহার উদ্ধৃত ষড়্‌বিংশ শ্লোকে উক্ত হইয়াছে, “এক পুরুষের বহু স্ত্রী বিহিত আছে, এক নারীর বহু পতি কোথাও শুনিতে পাওয়া যায় না"; সুতরাং, ইহা দ্বারা তাঁহার উল্লিখিত বেদবাক্যের সমর্থন হইতেছে; অর্থাৎ, বেদেও এক পুরুষের দুই বা বহুভার্য্যা বিধান, আর এক স্ত্রীর বহুপতি নিষেধ দৃষ্ট হইতেছে, এবং এই আখ্যানেও তাহাই লক্ষিত হইতেছে; সুতরাং, সামশ্রমী মহাশয় উল্লিখিত আখ্যানের এই অংশকে তাঁহার অবলম্বিত বেদবাক্যের “সাক্ষাৎ উদাহরণস্বরূপ” বলিয়া নির্দ্দেশ করিতে পারেন। কিন্তু, এই আখ্যানের উত্তরভাগে ঐ বেদবাক্যের সম্পূর্ণ বিপরীত ব্যবস্থার প্রতিপাদিত দৃষ্ট হইতেছে। যথা,

 যুধিষ্ঠির উবাচ,—

ন মে বাগনৃতং প্রাহ নাধর্ম্মে ধীয়তে মাতঃ।
বর্ত্ততে হি মনো মেহত্র নৈষোহধর্ম্মঃ কথঞ্চন।
শ্রূয়তে হি পুরাণেহপি জটিলা নাম গৌতমী।


  1. বহুবিবাহবিচারসমালোচনা, ১৬পৃষ্ঠা।