পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৬
বহুবিবাহ।

বিবাহ করেন নাই এবং ব্যাসপুত্র শুকের চারি পুত্র হরি কৃষ্ণ প্রভু গৌর তাঁহারাও বিবাহ করেন নাই ঐ পর্য্যন্ত বশিষ্ঠবংশ সমাপ্ত এবং যুধিষ্ঠির যুবরাজ হইয়া বহুদিন পরে জতুগৃহদাহে পলায়ন করিয়া চতুর্দ্দশ বর্ষ পরে দ্রৌপদীকে বিবাহ করেন এই সকল অনাশ্রমে দোষাভাব দেখিতেছি যদি দোষ খাকিত তবে সে সকল মহাত্মা ধার্মিক লোকে বিবাহ না করিয়া কালক্ষেপণ করিতেন না”[১]

 আশ্রম অবলম্বন না করিলে দোষ হয় না, দক্ষবচনের এই অর্থ স্থির করিয়া, অবলম্বিত অর্থের প্রামাণ্যার্থে, কবিরত্ন মহাশয়, যে সকল ঋষি ও রাজা বিবাহ করেন নাই, তম্মধ্যে কতকগুলির নাম কীর্ত্তন করিয়াছেন; এবং কহিয়াছেন, “এই সকল অনাশ্রমে দোবাভাব দেখিতেছি, যদি দোষ থাকিত তবে সে সকল মহাত্মা ধার্ম্মিক লোকে বিবাহ না করিয়া কালক্ষেপণ করিতেন না”। ইতি পূর্বে দর্শিত হইয়াছে, কবিরত্ন মহাশয়, দক্ষচনের ব্যাখ্যা করিয়া, বিনা আশ্রমে অবস্থিত হইলে দোষ নাই, এই যে সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, তাহা সম্পূর্ণ ভ্রান্তিমূলক। তৎপূর্ব্বে ইহাও দর্শিত হইয়াছে, পূর্ব্বকালীন মহৎ লোকে অবৈধ আচরণে দূষিত হইতেন, তবে তাঁহারা তেজীয়ান্ ছিলেন, এজন্য অবৈধাচরণনিবন্ধন প্রত্যবায়গ্রস্ত হইতেন না। অতএব, যখন পূর্ব্বদর্শিত শাস্ত্রসমূহ দ্বারা ইহা নির্ব্বিবাদে প্রতিপাদিত হইতেছে যে আশ্রমবিহীন হইয়া থাকা অবৈধ ও পাতকজনক কর্ম্ম; তখন, পূর্ব্বকালীন কোনও কোনও মহৎ লোকের আচার দর্শনে, আশ্রমের অনবলম্বনে দোষস্পর্শ হয় না, এরূপ সিদ্ধান্তু করা স্বীয় অনভিজ্ঞতার পরিচয় প্রদানমাত্র। বোধ হয়, কবিরত্ন মহাশয়, কথকদিগের মুখে পৌরাণিক কথা শুনিয়া, যে সংস্কার করিয়া রাখিয়াছেন; সেই

  1. বহুবিবাহরাহিত্যরাহিত্যনির্ণয়, ১৬ পৃষ্ঠা।