পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫০
উপসংস্থার।

ব্যবহার, ইহা কেহ প্রতিপন্ন করিতে পারিবেন না, এরূপ নির্দ্দেশ করিতে ভয়, সংশয় বা সঙ্কোচ উপস্থিত হইতেছে না। ফলতঃ, আমার সামান্য বুদ্ধিতে, যত দূর শাস্ত্রের অর্থবোধ ও তাৎপর্য্যগ্রহ করিতে পারিয়াছি, তদনুসারে, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহকাণ্ড শাস্ত্রসম্মত ব্যবহার বলিয়া সমর্থিত হওয়া সম্ভব নহে।

 যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা বিবাহ করা শাস্ত্রকারদিগের অনুমত ও অনুমোদিত কার্য্য, ইহা প্রতিপন্ন করিতে উদ্যত হইলে, যে কেবল ধর্ম্মশাস্ত্রবিষয়ে স্বীয় অনভিজ্ঞতার সম্পূর্ণ পরিচয় দেওয়া হয় এরূপ নহে, নিরপরাধ শাস্ত্রকারদিগকেও নিতান্ত নৃশংস ও নিতান্তু নির্বিবেক বলিয়া বিলক্ষণ প্রতিপন্ন করা হয়। যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহকাণ্ড যে যার পর নাই লজ্জাকর, ঘৃণাকর ও অনর্থকর ব্যবহার, তাহা প্রমাণ দ্বারা প্রতিপন্ন করিবার প্রয়োজন নাই। আমার বোধে, যে সকল মহাত্মারা, জগতের হিতের নিমিত্ত, শাস্ত্রপ্রণয়ন করিয়াছেন, তাঁহারা তাদৃশ ধর্ম্মবহির্ভূত লোকবিগর্হিত বিষয়ে অনুমতিপ্রদান বা অনুমোদনপ্রদর্শন করিয়া গিয়াছেন, ইহা মনে করিলে মহাপাতক জন্মে। বস্তুতঃ, মানবজাতির হিতাহিত ও কর্ত্তব্যাকর্ত্তব্য নিরূপণ করিবার নিমিত্ত যে শাস্ত্রের সৃষ্টি হইয়াছে, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহুরূপ পিশাচব্যবহার সেই শাস্ত্রের বিধি অনুযায়ী কার্য্য, ইহা কোনও মতে সম্ভব হইতে পারে না। ফলতঃ, যাঁহারা একবারে ন্যায় অন্যায় বোধশূন্য, সদসদ্বিবেচনাশক্তিবর্জিত এবং সম্ভব অসম্ভব ও সঙ্গত অসঙ্গত বিবেচনা বিষয়ে বহির্মুখ নহেন, ধর্ম্মশাস্ত্রে অধিকার থাকিলে, এবং তত্ত্বনির্ণয়পক্ষ লক্ষ্য হইলে, তাদৃশ ব্যক্তিরা, যদৃচ্ছাক্রমে যত, ইচ্ছা বিবাহ করা শাস্ত্রানুমোদিত কার্য্য, ঈদৃশ ব্যবস্থা প্রচারে প্রবৃত্ত হইতে পারেন, এরূপ বোধ হয় না।

 শাস্ত্রে দ্বিবিধমাত্র অধিবেদন অনুমত ও অনুমোদিত দৃষ্ট হইতেছে; প্রথম ধর্ম্মার্থ অধিবেদন, দ্বিতীয় কামার্থ অধিবেদন। পূর্ব্ব-