পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
বহুবিবাহ।

 পরিসংখ্যাতে শ্রুত অর্থের ত্যাগ, অশ্রুত অর্থের কম্পনা ও প্রাপ্ত বিষয়ের বাধ, নীমাংসাশাস্ত্রসিদ্ধ এই দোষত্রয় স্বীকার করিতে হয়; এজন্য গত্যন্তর সত্ত্বে পরিসংখ্য কোনও মতে স্বীকার করা যায় না।

 মীমাংসকেরা পরিসংখ্যাবিধির যে লক্ষণ নির্দিষ্ট করিয়াছেন, যে বিধি সেই লক্ষণাক্রান্ত হয়, তাহা পরিসংখ্যা বিধি বলিয়া পরিগৃহীত হইয়া থাকে। প্রথম পুস্তকে দর্শিত হইয়াছে, মনুর অসবর্ণবিবাহবিধি পরিসংখ্যাবিধির সম্পূর্ণ লক্ষণাক্রান্ত। কামার্থে অসবর্ণবিবাহ রাগপ্রাপ্ত বিবাহ। রাগপ্রাপ্ত বিষয়ে বিধি থাকিলে, বিহিত বিষয়ের অতিরিক্ত স্থলে নিষেধ বোধনার্থে, ঐ বিধির পরিসংখ্যাত্ব অঙ্গীকৃত হইয়া থাকে। সুতরাং, রাগপ্রাপ্ত অসবর্ণবিবাহ বিষয়ক বিধির পরিসংখ্যাত্ব অপরিহার্য্য ও অবশ্যস্বীকার্য্য হইতেছে; তাহা সিদ্ধ করিবার জন্য, অদ্যবিধ প্রমাণের অণুমাত্র আবশ্যকতা নাই। “পঞ্চ পঞ্চনখ ভক্ষ্যাঃ’ পাঁচটি পঞ্চনখ ভক্ষণীয়, এই বাক্যে পঞ্চনখভক্ষণ শ্রুত হইতেছে; কিন্তু পঞ্চনখভক্ষণবিধান এই বাক্যের অভিপ্রেত না হওয়াতে, শ্রুত অর্থের পরিত্যাগ ঘটিতেছে। এই বাক্য দ্বারা শশপ্রভৃতি পঞ্চ ব্যতিরিক্ত পঞ্চনখের ভক্ষণ নিষেধ প্রতিপাদিত হওয়াতে, অশ্রুত অর্থের কল্পনা হইতেছে। আর রাগপ্রাপ্ত শশ প্রভৃতি পঞ্চ ব্যতিরিক্ত পঞ্চনখভক্ষণের বাধ জন্মিতেছে। অর্থাৎ, পঞ্চনখভক্ষণরূপ যে অর্থ বিধিবাক্যের অন্তর্গত শব্দ দ্বারা প্রতিপন্ন হয়, তাহা পরিত্যক্ত হইতেছে; শশ প্রভূতি পঞ্চ ব্যতিরিক্ত পঞ্চনখভক্ষণনিষেধকপ যে অর্থ বিধিবাক্যের অন্তর্গত শব্দ দ্বারা প্রতিপন্ন হয় না, তাহা কম্পিত হইতেছে; আর ইচ্ছাবশতঃ, শশ প্রভৃতি পঞ্চ পঞ্চনখের ন্যায়, তদ্ব্যতিরিক্ত পঞ্চনখের ভক্ষণরূপ যে বিষয় প্রাপ্ত হইয়াছিল, তাহার বাধ ঘটিতেছে। এই রূপে পরিসংখ্যাবিধিতে দোষত্রয়স্পর্শ অপরিহার্য্য; এজন্য, গতান্তর সস্তুবিলে, পরিসংখ্যাস্বীকার করা যায় না। প্রথম পুস্তকে প্রতিপাদিত হইয়াছে, গত্যন্তর না থাকাতেই,