পাতা:বাঁশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
দারোগার দপ্তর, ১৬৬ সংখ্যা।

গিয়াছেন। এই সকল প্রশ্ন আমার মনোমধ্যে উদিত হইল। সমস্ত রাত্রি আমি এই সকল বিষয় ভাবিতে লাগিলাম।

 এইরূপ চিন্তা করিতে করিতে রাত্রি প্রায় তিনটা বাজিয়া গেল। আমি সে রাত্রি আর কোনরূপ গোলযোগের সম্ভাবনা নাই ভাবিয়া, এক প্রকার নিশ্চিন্ত হইয়াছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে আমার তন্দ্রাও আসিয়াছিল, এমন সময়ে সহসা সুধার গৃহদ্বার খুলিয়া গেল এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে এক আশ্চর্য্য বংশীরব আমার কর্ণগোচর হইল। আমি তখনই লম্ফ দিয়া উঠিয়া দাঁড়াইলাম। দেখিলাম, সুধা অত্যন্ত ভীত হইয়া আমারই দিকে আসিতেছে। আমি তাহাকে তদবস্থ দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “কি হইয়াছে মা? আজও কি সেই রকম ভয় পাইয়াছি?”

 সুধা কপিতে কঁপিতে বলিল, “মহাশয়, আজ আবার সেই রকম শব্দ শুনিয়াছি। আমার নিশ্চয় বোধ হইতেছে, আমি আর বাঁচিব না। দিদিও মৃত্যুর আগে তিন চারিদিন এই রকম শব্দ শুনিয়াছিল।”

 আমি তাহাকে শান্ত করিলাম। বলিলাম, “মা! আর কখনও তোমার এ রকম শব্দ শুনিতে হইবে না। আমি এ রহস্য শীঘ্রই ভেদ করিব। আজ তুমি ভিতরে যাও। রাত্রি প্রায় সাড়ে তিনটা বাজিয়াছে। কিন্তু আজিকার ভয়ের কথা যেন আর কেহ জানিতে না পারে। তোমার কোন ভয় নাই। আমি কালই তোমার ভয়ের প্রকৃত কারণ বাহির করিব।”

 আমার কথা শুনিয়া সুধা বলিল, “আপনি কি আজ সমস্ত রাত্রি জাগরণ করিয়া আছেন?”

 আ। হাঁ মা! আমি যখন যে কার্য্যে নিযুক্ত হই, তখন