পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Տի, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড বড় বড় সাহেবকেও জবাই করেছে- গুলি করেছে।” পাশে পার্ক-রোডের একটি ড্রেন দেখিয়ে বলল, ”এখানে তিনটা, ওখানে ১টা, এই রকম অনেক সাহেবের লাশ এই ড্রেনেই আছে হুজুর। ওরা ভালভাবে পুতে রাখতেও আমাকে দেয়নি। আমাকে সন্দেহ করে খুব মারতো, তার উপর আমার চাকুরী নষ্ট করে দিল সাহেব। কয়েক মাস ধরে না খেয়ে আছি।” ঝাড়ুদার দাশীন পাক বর্বরদের বুলেটের সামনে না খেয়েই দীন কাটিয়েছে। চাকুরীতে পূর্নবহালের কথা সেদিন সে মুখে আনতে পারি নাই। তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, যারা এমনিভাবে শত শত মানুষকে হত্যা করতে পারে তাদের এক মুঠো ভাতের অভাবে এক গরীবের জন্য চিন্তা করার সময় কোথায়? বগুড়া রেল এস ডি-ও বাংলোর পূর্বদিকের মাঠটা এখন কবরস্থানে পরিণত হয়েছে। বগুড়া শত্রমুক্ত হওয়ার পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত এই বাংলোতে কেন বাঙালী আসতে পারেনি। বগুড়া শহর শত্রমুক্ত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এই বাংলোর প্রতি ঘরের মেঝে আর দেয়ালে মানুষের রক্তে ভেজা বহু কাপড়-জামা ইত্যাদি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল। বাংলোর উপর তলার হাউজে বর্বরতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ পাওয়া যায়। এই হাউজটি ছিল সম্পূর্ণ মানুষের রক্তে ভরা। রক্তগুলো জমা হয়ে ক্রমশঃ জমাট বেধে যায়। কোদাল দিয়ে মাটি কাটার মত জমাট বাঁধা রক্ত কেটে এই হাউজ পরিষ্কার করা হয়েছে। জবাই করা মানুষের রক্তে স্রোত দেখার জন্যই বোধ হয় হাউজে রক্ত জমা করতো। রক্ত দেখেই হয়তো রক্তপানের তৃষ্ণা জল্লাদদের বাড়তো বেশী । বগুড়া রেলষ্টেশন আর ষ্টেশন সংলগ্ন রেললাইনের আশেপাশে কত নিরীহ বাঙালীকে যে পাকসেনা আর তার সহযোগীরা হত্যা করেছে তার হিসেব নেই। কত নিরীহ মানুষ যে এই দুস্যদের হাতে প্রাণ দিয়েছেন আর একান্ত অসহায়ভাবে মৃত্যুকে মেনে নেয়েছেন কেউ বলতে পারেনা। বগুড়ায় পাক দস্যরা বাঙ্গালীদের ধরে বলত, ইছিকো খরচা খাতা মে (মৃত্যু খাতা) উঠা দেও। ---বোধ করি রেলষ্টেশনের ও তার আশপাশের নিষ্ট্রর