পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



749

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: একাদশ খণ্ড

 এদিকে খানসেনা কুমিল্লার পশ্চিমে দাউদকান্দিতেও একটি নতুন ছাউনি খুলতে বাধ্য হল। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে, ওরা নাজেহাল। এখন ওদের কাছে বড় সমস্যা এই গুরত্বপূর্ণ অঞ্চলটিকে মুক্তিবাহিনীর দুর্বার গতিপথ থেকে দুরে রাখা। তাই এখন ওরা শুধু কুমিল্লার ওপর ভরসা করতে পারছে না। তাই এই নতুন ছাউনি।

 ইতিমধ্যে চান্দিনা থানাও মুক্তিবাহিনীর দখলে এসেছে। চান্দিনা দাউদকান্দির আরও পশ্চিমে। থানার পুলিশরা পালিয়েছে। মেঘনার তীরে চান্দিনা জলপথে ঢাকার সঙ্গে কুমিল্লার সংযোগ রক্ষা করে থাকে।



-আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৬ নভেম্বর, ১৯৭১
* * * * *

খুলনা শহরের দিকে মুক্তি সেনারা অগ্রগতি

সাতক্ষীরা ঝিকরগাছা হতে খানেরা বিতাড়িত

(ষ্টাফ রিপোর্টার)

 বনগাঁ সীমান্ত, ২৫ শে নভেম্বর-মুক্তিবাহিনী ঝিকরগাছা বাজার থেকে পাকিস্তানী সৈন্যদের হটিয়ে যশোর সেক্টরে আজ একটি নতুন ফ্রণ্ট খুলেছে। এই ঝিগরগাছা গত ৮ই এপ্রিল মুক্তিবাহিনী আজ সারা সাতক্ষীরা মহকুমা থেকে পাক সৈন্যদের বিতারিত করেছে। সাতক্ষীরা থেকে মুক্তিবাহিনীর একটি কলাম খুলনা শহরের দিকে অভিযান করেছে।

 যশোর ক্যাণ্টনমেণ্টের চারপাশে মুক্তিবাহিনী আজ আক্রমণের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি করেছে।

 চৌগাছা থেকে কপোতাক্ষ নদী অতিক্রম করে মুক্তিবহিনীর একটি নতুন কলাম যশোর শহরের ৪ মাইল উত্তর-পশ্চিমে গিয়ে পৌছেছে।

 কৃষ্ণনগর থেকে 'যুগান্তর’ এর সংবাদদাতা জানিয়েছেন যে, গত রাতে ঝিনাইদহ শহরে অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহে অবস্থিত পাকিস্তানী সৈন্যদের একটি ব্রিগেডকে যশোর ক্যাণ্টনমেণ্ট থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। কুষ্টিয়ার মহেশপুর ও দর্শনা সম্পূর্ণভাবে মুক্তিবাহিনীর দখলে এসেছে। ফলে খুলনা-দর্শনা ট্রেন সার্ভিস বাতিল হয়ে গেছে।

রংপুর দিনাজপুরে

 শিলিগুড়ি থেকে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে যে, মুক্তিবাহিনী রংপুর ও দিনাজপুরের প্রায় সাড়ে চারশ বর্গমাইল এলকায় মুক্ত করেছে।

 কুষ্টিয়া জেলায় মহেশপুর দখল করে মুক্তিবাহিনী চিত্রা নদীর দক্ষিণ তীরে অগ্রবর্তী ঘাঁটি স্থাপন করেছে। কৃষ্ণনগর থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন যে, মুক্তিবহিনী খুলনা-কুষ্টিয়া রেল লাইনের কাছাকাছি কতগুলি অঞ্চল থেকে পাকিস্তানী সৈন্যদরে বিতাড়িত করলে বাংলাদেশের এই অঞ্চলের মধ্যে ট্রেন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন অংশে মুক্তিবাহিনী সাফল্য লাভ করে চিত্রা নদীর দক্ষিণ তীরে গিয়ে পৌছেছে। ফলে চুয়াডাঙ্গার ৯টি গ্রাম সম্পূর্ণভাবে পাক সৈন্য কবলমুক্ত হয়েছে। এখন মুক্তিবাহিনী মেহেরপুরের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করায় পাকিস্তানী ফৌজ চাঁদবিল গ্রামের দিকে পিছিয়ে যাবার চেষ্টা করছে।

 মুজিবনগর থেকে ইউ এন আই জানাচ্ছেন: বাংলাদেশ সরকারের জনৈক মুখপাত্র বলেছেন যে, মুক্তিবাহিনী ১২০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় অসামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।



-যুগান্তর, ২৬ নভেম্বর, ১৯৭১
* * * * *