বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ত্রয়োদশ খণ্ড).pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

118 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ত্রয়োদশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ বৃটিশ শ্রমিক দলের প্রতিনিধি মিঃ ডগলাস আনন্দবাজার ২৪ এপ্রিল, ১৯৭১ ম্যান কর্তৃক পশ্চিম পাকিস্তানের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের দাবী আক্রমণকারী পঃ পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক অবরোধ করতে হবে বৃটিশ শ্রমিক দলের প্রতিনিধির দাবী \ বিশেষ প্রতিনিধি \ বৃটিশ পার্লামেন্টের শ্রমিক দলের প্রতিনিধি শ্ৰী বি ডগলাস ম্যান শুক্রবার প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, পশ্চিম পাকিস্তান বাংলাদেশ আক্রমণ করেছে। সেখানে জনগণকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। ওখানে যুদ্ধবিরতি করতে পশ্চিম পাকিস্তান যাতে বাধ্য হয়, তার জন্য রাষ্ট্রসংঘ ও কমনওয়েলথের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক অবরোধ করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের অবস্থা স্বচক্ষে দেখবার জন্য শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে শ্রী ম্যান বাংলাদেশ সীমান্তে এসেছিলেন। সাংবাদিকদের কাছে তিনি অভিভূত কষ্ঠে বলেন, শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পাক সৈন্যদের মর্মান্তিক হিংস্রতার তিনি যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পেয়েছেন। নির্বিচারে মানুষকে সেখানে হত্যা করা হয়েছে। চারদিকে একটা আতঙ্কের আবহাওয়া। এর পিছনে উদ্দেশ্য কি তিনি জানেন না। তবে তিনি এটা বুঝতে পারছেন, বাংলাদেশ ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে আর মিলনের কোনো সম্ভাবনা নেই। যা হয়েছে তা আক্রমণ - পশ্চিম পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তানের ওপর আক্রমণ। আন্তর্জাতিকভাবে একটা আক্রমণের ঘটনা হিসাবে এটিকে সকলের গ্রহণ করা উচিত। গোলাপী শংকটের সঙ্গে অক্সফোর্ড টাই পরা কেনলিংটনের এই তরুণ সুদর্শন এম-পি সাংবাদিকদের বলেন, পূর্ববঙ্গে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বৃটেনের সংসদ সদস্যরা উদ্যোগী হয়ে একটি কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির তিনি একজন সদস্য। সীমান্তের অভিজ্ঞতা শ্রী ম্যান বলেন, সীমান্তের শরণার্থীরা আমাকে বলেছেন পাঞ্জাবী সৈন্যরা গ্রামে গ্রামে এসে নির্বিচার হত্যাকান্ড চালিয়েছে। বাড়ী-ঘর-দোরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তারপর আওয়ামী লীগ নেতাদের খুঁজে বার করার চেষ্টা করেছে। অত্যাচারের সাক্ষ্য-প্রমাণগুলি খুবই স্পষ্ট। তবে এই ব্যাপক নির্বিচারে হত্যাকান্ড বাঙালীদের তাড়ানোর জন্য সুপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে কিনা, তা তিনি বলতে পারেনা। শ্রী ম্যান মনে করছেন, পূর্ববঙ্গে যে সব মানুষ এখনও আছেন, তাঁরা না খেয়ে মরবেন। কারণ বীজ বোনা হয়নি। চাষবাস বন্ধ। এর ফলাফল হবে মর্মম্ভদ। আরও উদ্বাস্ত্ত আসতে থাকবেন। আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে অবিলম্বে যুদ্ধপীড়িত মানুষদের উদ্ধার করা দরকার। বায়াফ্রার সঙ্গে তুলনা হয় না বাংলাদেশের অবস্থাকে অনেকে বায়াফ্রার সঙ্গে তুলনা করছেন, কিন্তু শ্রী ম্যানের মতে, বায়াফ্রার সঙ্গে এখানকার পরিস্থিতির তুলনাই হয় না। বায়াফ্রাতে পূর্ববাংলার মত একটা নির্বাচন হয়নি। তাছাড়া ফেডারেল সরকারের সঙ্গে বায়াফ্রা এমন ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্নও ছিল না।