সহায়তায় ৪র্থ বেঙ্গলের অপারেশন এলাকায় নিয়োজিত থেকে শূন্যতা পূরণ করবে এবং তাদের তৎপরতা অব্যাহত রাখবে।
(ড) অস্ত্র; গোলাবারুদ ও অন্যান্য যুদ্ধসরঞ্জাম যা কিছু আছে তা পুনরায় বিভিন্ন দলের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হবে।
(ত) গোলন্দাজ বাহিনীর প্রথম ফিল্ড রেজিমেণ্ট ‘কে-ফোর্স-এর অধীনে নিযুক্ত করা হলো।
(ণ) ‘কে-ফোর্স' এবং ২নং সেক্টরের অধিনায়কত্ব যৌথভাবে আমার অধীনে থাকবে। আমার অবর্তমানে এই দুটি বাহিনী বিভক্ত হবে। কে ফোর্স-এর অধিনায়কত্ব করবেন মেজর সালেক ও ২নং সেক্টরের অধিনাকত্ব দায়িত্ব পালন করবেন।
কনফারেন্সের বর্ণিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২নং সেক্টরের পুনর্বিন্যাস ও পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা হয়। নিয়মিত বাহিনীর ‘কোর্স-ফোর্স' ব্রিগেড গঠন করার কাজে আমাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। যেহেতু যুদ্ধসামগ্রীর যথেষ্ট অভাব ছিল বিশেষ করে অস্ত্রশস্ত্র; গোলাবারুদ ও পোশাকের; তবুও সংগঠনের কাজ মোটামুটি এগিয়ে চলে। সেপ্টম্বরের শেষের দিকে ৯ম বেঙ্গল রেজিমেণ্ট কসবাতে; ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেণ্ট শালদা নদীতে এবং ১০ম বেঙ্গল রেজিমেণ্ট বেলুনিয়াতে সংগঠিত হয়ে পুনরায় যুদ্ধের জন্য তৈরী হয়ে যায়। যুদ্ধে পুনঃনিয়োগের আগে এইসব ইউনিটগুলোকে তিন সপ্তাহের জন্য ব্যাপকভাবে সমন্বিত প্রশিক্ষন দেয়া হয়। অক্টোবর মাসের মাঝামাঝিতে ৯ম বেঙ্গল ইউনিটকে পরীক্ষামূলকভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে পুনর্নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেই। এই সময়ে আমাদের সেক্টর ট্রুপস কসবা; মন্দভাগ প্রভৃতি এলাকায় পাকসেনাদের উপর মারাত্মকভাবে আঘাত হেনে চলছিল। ফলে পাকসেনারা এই এলাকায় ভীষণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। আমি এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে তাদেরকে সম্পূর্নভাবে এই এলাকা থেকে বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নেই। কসবার পূর্বাংশ ইতিমধ্যেই আমাদের নিয়ন্ত্রাধীন ছিল। পাকসেনারা সেখান থেকে পিছু হটে পূর্বেই পশ্চিমাংশে পুরানা বাজারের নিকট তাদের ঘাটি স্থাপন করেছিল। পাকসেনাদের এই ঘাটিটিও ৯ম বেঙ্গল রেজিমেণ্টকে আক্রমণের নির্দেশ দেই। নির্দেশ অনুযায়ী মেজর আইনউদ্দিন তাঁর ব্যাটালিয়নকে লাটুমুড়ার পিছনে সমবেত করে এবং ২০শে অক্টোবর পর্যন্ত শত্রু অবস্থানের সমস্ত সংবাদ সংগ্রহ করে। শত্রু অবস্থানের তথ্য জানার পর বোঝা যায় যে; পাকসেনারা তাদের অবস্থানটি পূর্ব এবং দক্ষিনমুখী করে অধিক শক্তিশালী করে তুলেছে। আমি মেজর আইনউদ্দিনকে ৮ম বেঙ্গল রেজিমেণ্টের দুই কোম্পানী দিয়ে উত্তর দিক থেকে পাক অবস্থানের উপর আক্রমন করার নির্দেশ দেই। শত্রুসেনারা মনোযোগ অন্যদিকে পরিবর্তন করার জন্য একটি কোম্পানী দিয়ে কসবার দিক থেকে অবস্থানের উপর চাপ সৃষ্টি করার নির্দেশ দেই। আরেকটি কোম্পানী রিজার্ভে থাকার আদেশ করি। ১ম ফিল্ড ব্যাটারীকে এই আক্রমণে সহায়তার জন্য মেজর আইনউদ্দিনের অধীনে দেই।
২২শে অক্টোবর ভোর সাড়ে পাঁচটার সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ম রেজিমেণ্ট পাকসেনাদের উপর আক্রমন চালায়। প্রায় ১০ মিনিট তীব্র কামানের গোলার আক্রমণের পর উত্তর দিক থেকে দুটি কোম্পানী লেঃ আজিজ ও সুবেদার মেজর শামসুল হকের নেতৃত্বে পাকসেনাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই অতর্কিত আক্রমণের জন্য পাকসোরা প্রস্তুত ছিল না। প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে তাদের অবস্থানগুলো ভেঙ্গে পড়ে। তারা দিশেহারা হয়ে অবস্থান পরিত্যাগ করে পেছনের ককে পালিয়ে যায়। তিনঘণ্টা যুদ্ধের পর ৯ম রেজিমেণ্ট পাকসেনাদের অবস্থানটি দখল করে নেয়। যুদ্ধে ২৬জন পাকসেনা নিহত ও ১৮জন আহত হয়। ১১টি এল- এম-জি ১টি পিস্তল সিগনাল; ৪০টি এইচই-৩৬ গ্রেনেড; ৩টি ৯৪-এনার্গা; ৪৪টি প্লাষ্টিক মাইন; ১টি ম্যাপ; ২টি র্যাঙ্কের‘ব্যাজ' আমাদের হস্তগত হয়। এই যুদ্ধে আমাদের লেঃ আজিজ ও ৩ জন সৈনিক শহীদ হয় এবং *১৫জন আহত হয়। পাকনোদের একটি ছোট দল পিছনে হটে গিয়ে ছোট একটি নালার পশ্চিম তীরে পুনরায় দ্রুত অবস্থান গড়ে তোলার চেষ্টা করে। পরদিন ভোর ৪টায় সুবেদার মেজর শামসুল হকের কোম্পানী পাকসেনাদের এই অবস্থানের