পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (নবম খণ্ড).pdf/৩৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : নবম খণ্ড
৩৪৭

কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল। জনাব এম আর আখতার মুকুলকে কেরোসিন, ডিজেল এবং পেট্রোল-এ পারমিট ইস্যু করার দায়িত্ব দেয়া হয়। খালি হাতে ফিরে আসার খবর জেনে মুকুল একান্তে ডেকে নিয়ে বললো, “শালা সেরেছে। এবার আস্তানা গুটাও। পাকিস্তানী খুনীরা এবার তোমার জন্যে ট্যাংক নিয়া আইবো। এদিকে তোমার মুক্তি সেনাদের থামাও। এর কোন শৃঙ্খলা মানে না। এরাই এখন প্রব্লেম। দেখলাম তাই। মুক্তি সেনাদের মধ্যে একদল ভীষণ উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠেছে। এদের নিয়ন্ত্রন রাখাই মুশকিল। তাছাড়া পাকসেনা সরে যেইে দলীয় কোন্দল মাথাচাড়া দিয়েছে। দুষ্কৃতকারীরাও সুযোগ নেবার চেষ্টায় আছে। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্যে শেষ চেষ্টা চালালাম।

 ৮ই এপ্রিল থেকে ১৩ই এপ্রিল বিশেষ কোন ঘটনা ঘটালো না। ১৩ই এপ্রিল সিরাজগঞ্জের মহকুমা অফিসার শহীদ শামসুদ্দীন সাহেব দেখা করলেন এবং সিরাজগঞ্জ-নগরবাড়ীর ডিফেন্সের ব্যবস্থাও বগুড়া থেকে করতে অনুরোধ জানালেন।

 ১৪ই এপ্রিল, হিলি থেকে একটা খবর আসে। যেসব এম্যুনিশন আড়িয়া যুদ্ধে পাওয়া গেছে তার নমুনা নিয়ে অতি অবশ্য হিলিতে দেখা করতে হবে। ১৪ই এপ্রিল রাতে সুবেদার আকবরের নেতৃত্বে মুক্তি সেনার একটি দল নগররাড়ী প্রতিরক্ষার জন্য পাঠানো হলো।

 ১৬ই এপ্রিল, জনাব এম, আর, আখতার মুকুল, জনাব আসাদুজ্জামান, মজিবুর রহমান এমপি, ডাঃ জাহিদুর রহমান এমপি এবং দু'জন ইপিআরকে সাথে নিয়ে এম্যুনিশনের নমুনাসহ বিকেল বেলা হিলি পৌঁছে। সেদিন বিকেলেই কর্নেল ব্লিস এম্যুনিশনগুলো পরীক্ষা করেন। ঐদিন রাতেই আমাদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্যে কোলকাতা যেতে বলা হয়। ১৭ই এপ্রিল ভোরে আমরা কোলকাতা রওয়ানা হই। ১৯শে এপ্রিল সন্ধ্যায় লর্ড সিনহা রোডে অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ অর্থমন্ত্রী জনাব মনসুর আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব কামরুজ্জামান এবং পার্লামেণ্ট সদস্য জনাব আবদুল মান্নান এবং আবদুস সামাদ-এর নিকট বগুড়ার মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে প্রতিবেদন পেশ করি।

 ২২শে এপ্রিল বগুড়া শহরের পতন ঘটে।