পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চদশ খণ্ড).pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

{{rh||বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চদশ খণ্ড|}২০৭}

 ক্যাম্প প্রধান (১) উপ-ক্যাম্প প্রধান (১); ক্যাম্প তত্ত্বাবধায়ক (২); ছাত্র প্রতিনিধি (২); স্বাস্থ্য অফিসার (২); পলিটেকিলে মটিভেটর (৪); ফিজিকেল ইনস্ট্রাকটর (৪)।

 তাছাড়া প্রাথমিক পর্যায়ে ইয়থ ক্যাম্প ডাইরেকটরেট যে সব ব্যক্তিকে নিয়ে গঠন করা হয়েছিল, তাঁদের নামও এখানে উল্লেখ করা হলঃ

 সর্বজনাব মাহবুব আলম, প্রকল্প সমন্বয়কারী; ড. হাবিবুর রহমান, পরিচালক (প্রশিক্ষণ); অধ্যাপক নূরুল ইসলাম চৌধুরী, এম, এন, এ; জনাব মুজাফফর আহমদ, এম,পি,এ; জনাব খারেদ মুহম্মদ আলী, এম, এন, এ; জনাব বজলুর রহমান, রাজনৈতিক নেতা; অধ্যাপক দেবব্রত দত্ত গুপ্ত, উপ-পরিচালক এবং প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী; জনাব মোশারফ হোসেন, হিসাব রক্ষণ অফিসার।

 প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখযোগ্য যে, উপরোক্ত কার্যক্রম, পরিচালনা ব্যবস্থা ও আনুষঙ্গিক নীতি-পদ্ধতির মধ্যে পরবর্তীকালে কিছুটা পরিবর্তন এবং পরিবর্ধন করা হয়েছিল। কিন্তু সে সব পরিবর্তন তেমন উল্লেখযোগ্য নয় বলে এখানে উল্লেখ করা হল না।

 ১। অভ্যর্থনা কেন্দ্র (Reception Camp)

 স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্যে বিভিন্ন নদী, নালা, খাল-বিলসহ দুর্গম রাস্তা-ঘাট পায়ে হেঁটে ও নৌকাযোগে অতিক্রম করে ক্লান্ত, শ্রান্ত ও অবসন্ন অবস্থায় যখন হাজার হাজার যুবক ত্রিপুরা রাজ্যে প্রবেশ করত, তখন এই সমস্ত রিসিপশন ক্যাম্পের মধ্যে যুবকদেরকে ৭ দিনের জন্য ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হত। এই সময় যুবকেরা বিশ্রাম, খাওয়া, সাধারণ পোশাক, চিকিৎসা ও নিরাপত্তার সুযোগ লাভ করত। এইসব ক্যাম্পের পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়-দায়িত্ব সাধারণত বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের প্রতিনিধিদের ওপরই ন্যস্ত ছিল। তবে, অধিকাংশ দেশেই বাংলাদেশের পক্ষ হতে একজন এম,পিএ/এম,এন,এ-কে, ক্যাম্প প্রধান/উপ-প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হত।

 ২। যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (Youth Training Camp)

 অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলোতে ৭ দিনের বিশ্রাম, খাওয়া ও চিকিৎসার পর একটি সুনির্দিষ্ট প্রোফরমার মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদানে ইচ্ছুক যুবকদেরকে ৪৫ দিনের প্রশিক্ষণের জন্য বাছাই করে, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে সাধারণত তিন ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। এই প্রশিক্ষণ কোর্সগুলো নিম্নরূপ ছিলঃ

 ক। পলিটিকেল মটিভেশন (Political Motivation)

 এই ধরনের প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল, যুদ্ধে অংশগ্রহণের ইচ্ছুক যুবকদেরকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তোলা এবং বাঙালী জাতীয়তাবাদ, বাঙালী সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করা।

 খ। উৎপাদন ও উন্নয়নমূলক কাজের প্রশিক্ষণ (Base work Training)

 এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল, স্থানীয় সম্পদ, শক্তি ও সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থাপনাসহ উৎপাদন এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে দেশের যুবশক্তি কি ভূমিকা পালন করতে পারে, সে সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দান করা। তাছাড়া, এই স্বাধীনতা সংগ্রাম যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে যাতে বাঙালী একটি জাতি হিসেবে টিকে থাকার জন্যে নিজস্ব সম্পদ, শক্তি, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, নেতৃত্ব, কর্মপ্রচেষ্টা ও কঠোর শ্রমের দ্বারা আপাতত শহুরে অর্থনীতিকে বাদ দিয়ে (যেহেতু শহরগুলো শত্রুদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিল) নিজেরাই