পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খন্ড
৭২৪

৫৩ হাজার টাকা ধার্য করিয়াছিলেন। প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি দাবী বহুকাল হইতে চলিয়া আসিতেছে। আমরা উক্ত উদ্দেশ্যে এই বাজেটে ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করিয়াছি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনুন্নত শ্রেণীর মধ্যে শিক্ষার প্রসার যাহাতে ত্বরান্বিত হয়, সেই জন্য সরকার খুব উদ্বিগ্ন। তদুদ্দেশ্যে ৪ লক্ষ টাকার স্বাভাবিক বরাদ্দ ছাড়াও বাজেটে আরো অতিরিক্ত ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছে। অনুরূপভাবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য স্বাভাবিকভাবে বরাদ্দকৃত ১০,০০০ টাকা ছাড়াও আরো অতিরিক্ত ৩,০০০ টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছে।

চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য

 এই খাতে ৩ কোটি ২১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছে। প্রধান প্রধান পরিকল্পনার জন্য বর্ধিত হারে অর্থ বরাদ্দ করা হইয়াছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের জন্য বহনযোগ্য নূতন এক্সরে যন্ত্র এবং ষ্টেরিলাইজার ক্রয় বাবদে অর্থ বরাদ্দ করা হইয়াছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ক্লাশ খোলার জন্য ব্যবস্থা হইয়াছে। ঐ কলেজের গৃহনির্মাণ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হইয়াছে। সরকারী হাসপাতালসমূহে ঔষধপত্র ও অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামাদি ক্রয়ের জন্য অধিক অর্থ বরাদ্দ করা হইয়াছে। সরকার প্রদেশের মেডিক্যাল স্কুলগুলিকে কলেজে উন্নীত করিবার দাবী সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত আছেন। কাজেই আর্থিক বৎসরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি মেডিক্যাল কলেজ খোলার মত প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা করিয়াছেন।

 ১৯৪৯-৫০ সালে বি,সি,জি, টিকা প্রদান কর্মসূচী গৃহীত হয়। এবং ক্রমাগত বাধিত হারে ইহার কাজ অগ্রসর হইতেছে। চলতি সনের বাজেটে এই জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা হইয়াছে।

 বিস্তৃত স্থান জুড়িয়া মশক নিবারণী ও ম্যালেরিয়া নিরোধ অভিযান চালান হইতেছে এবং বন্যাপীড়িত এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইতেছে। গৃহীত ক্রমসম্প্রসারণ কর্মসূচী অনুয়ায়ী ১৯৫৬-৫৭ সালের জন্য ৫০ লক্ষ লোককে ম্যালেরিয়া রোগমুক্ত করিবার প্রস্তাব করা হইয়াছে।

 সুতরাং বাজেটে বর্ধিত হারে অর্থ মঞ্জুর করা হইয়াছে। শহর এলাকায় ম্যালেরিয়া নিরোধ ব্যবস্থার জন্য পূর্বাপেক্ষা অধিক অর্থ মঞ্জুর করা হইয়াছে।

 এ পর্যন্ত আংশিকভাবে চারিটি জেলায় স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সম্বন্ধীয় ব্যবস্থ্যাবলী প্রাদেশিক সরকার স্বহসেত্ম গ্রহণ করিয়াছেন এবং তাহা পুনর্গঠন করিয়াছেন। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান ও তৎসংক্রান্ত বিভিন্ন পদে চাকুরীর বাবদ প্রতি বৎসর ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়। আরো কতকগুলি ডিসপেন্সারী প্রাদেশিক সরকারের অধীনে আনার জন্য ১৯৫৬-৫৭ সালের বাজেটে অধিকতর অর্থ বরাদ্দ করা হইয়াছে।

 ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে ইনপ্রুভমেণ্ট ট্রাষ্ট স্থাপন করিবার জন্য ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছে। ইহার জন্য বহু পূর্বেই প্রয়োজনীয় আইন পাশ করা হইয়াছে।

কৃষি

 কৃষিখাতে ২ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছে। কৃষি স্কুল ও কৃষি কলেজের জন্র স্বাভাবিক ব্যবস্থা বাদে কৃষি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য অতিরিক্ত টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছে। অধিকতর ব্যাপকভাবে কৃষি গবেষণা চালাইবার জন্য বর্তমান বৎসরের বাজেটে বর্ধিত হারে অর্থ মঞ্জুর করা হইয়াছে। অধিক খাদ্য ফলাও আন্দোলনের জন্য বর্ধিত বরাদ্দ এই বাজেটের আর একটি বৈশিষ্ট্য।

মৎস্য

 এই খাতে বাজেটে ৬ লক্ষ ১৯ হাজার টাকার ব্যবস্থা করা হইয়াছে।