পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

156 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় উপদেষ্টা পরিষদকে সংগ্রামী ঐক্যের স্বাধীন বাংলা ৭ নভেম্বর, ১৯৭১ প্রাণবন্ত প্রতীকে পরিনত করা হউক ১ম বর্যঃ ১৮শ সংখ্যা সম্পাদকীয় উপদেষ্টা পরিষদকে সংগ্রামী ঐক্যের প্রাণবন্ত প্রতীকে পরিনত করা হউক। ৬ই নভেম্বর সর্বদলীয় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক আহবান করা হইয়াছে। উপদেষ্টা পরিষদকে আতুড়েই গলা টিপিয়া মারার জন্য ঐক্যবিরোধী কোন কোন মহল ও দেশী-বিদেশী প্রতিক্রিয়াশীলরা বিশেষতঃ মার্কিন লবী যেভাবে আদা-জাল খাইয়া লাগিয়াছিল উহার পরিপ্রেক্ষিতে এই বৈঠকের তাৎপর্য রহিয়াছে। উদ্দীপনা সৃষ্টি হইয়াছিল। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে সংগ্রামী শক্তিগুলির মধ্যে ঐক্য ও সমন্বয় বিধানের যে বহুলাংশে সামাধান হইবে এবং এই উপদেষ্টা পরিষদ ধীরে ধীরে পূর্ণাঙ্গ জাতীয় মুক্তিফ্রন্টের স্তরে উন্নত হইবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় জনগণের এই আশা পূরণ হয় নাই। ঐক্যের ভিত্তি আরও প্রসারিত কিম্বা গভীরতম হওয়া দুরের কথা উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের মধ্যে দিয়া যে সূচনাটি হইয়াছে ইহাকেই অস্কুরে নির্দিষ্ট করার জন্য পূর্বোক্ত মহলগুলি উঠিয়া পড়িয়া লাগে। ইহার ফলে গত দুই মাসের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদের একটিও বৈঠক অনুষ্ঠিত হইতে পারে নাই। ঐক্যের পথে এই সকল বাধা থাকা সত্বেও ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা ফুরাইয়া যায় নাই। বরং বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের অগ্রগতির সাথে সাথে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা আরও তীক্ষভাবে অনুভূত হইতেছে শত্রর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঐক্য প্রয়োজন-ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন মুক্তাঞ্চলগুলির পূর্ণগঠনের ক্ষেত্রেও। কাজেই করিলেও সমস্যার সমাধন হইবে না। উপদেষ্টা পরিষদকে বাংলাদেশের সংগ্রামী শক্তিগুলির প্রাণবন্ত ঐক্যের প্রতীক হিসাবে দেশবাসীর সম্মুখে তুলিয়া ধরিতে হইবে, মুক্তিসংগ্রামকে সুসংগঠিত ও বিভিন্ন সংগ্রামী শক্তির তৎপরতার মধ্যে সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে ইহাকে যোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করিতে দিতে হইবে। তাছাড়া উপদেষ্টা পরিষদকে শুধু উপরের তলায় সীমাবদ্ধ না রাখিয়া নীচের স্তরগুলিতেও ঐক্যবদ্ধ কমিটি গঠন করিতে হইবে। দেশবাসীর জঙ্গী উদ্দীপনা বৃদ্ধির জন্য সরকারের তরফ হইতে স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যতের একটি রূপরেখা তুলিয়া ধরা এবং বক্তৃতায় বিবৃতিতে, বেতারে, সংবাদপত্রে উহা ব্যাপকভাবে প্রচার করা দরকার। বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন সরকারী মুখপাত্র বলিয়াছেন, সরকারের লক্ষ্য বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করা। কখনও বা বলা হয়, আওয়ামীলীগ উহার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তাবায়িত করিবে। সম্প্রতি একজন সরকার মুখপাত্র বলিয়াছেন, বাং m মুক্তাঞ্চলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিকদিগকে খাজনা হইতে অব্যাহতি দেওয়া হইয়াছে। এই সমস্ত কথাবার্তার মধ্যে দিয়া স্বাধীন বাংলাদেশের রূপরেখা টুকরা টুকরা ভাবে তুলিয়া ধরার চেষ্টা দেখা গেলেও ইহা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন যা তাহা হইল, স্বাধীন বাংলাদেশে কার্যকরী করা হইবে এরূপ একটি কর্মসূচী ঘোষণা। স্বাধীন বাংলাদেশে যে আবার সাম্রাজ্যবাদ বিশেষতঃ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও দেশীয় পুজিপতি