পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

195 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম ংবাপত্র তারিখ বাংলার স্বাধীনতা বাংলার মুখ ২৬ নভেম্বর, ১৯৭১ অশ্র আর রক্তে ১ম বর্ষঃ ১০ম সংখ্যা ংলার স্বাধীনতা অশ্র আর রক্তে \Ֆ|Տ7 অশ্রু আর রক্ত। এরই বিনিময়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলার সাড়ে সাত কোটি নর-নারী স্বাধীনতা সংগ্রাম। কালের গতির সাথে সাথে স্বাধীনতার সোনালী সূর্যের ক্ষণটি নিকটতর হচ্ছে। কিন্ত এর জন্যে চাই আরো রক্ত, আরো অশ্রু, আরো আত্মত্যাগ, আরো জীবন ও কষ্ট। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ গত বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে এক বেতার ভাষণে এই অভিতম ব্যক্ত করেন। আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল সংগ্রাম প্রতিটি নারী-পুরুষের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। এই পর্যায়ে শত্রসংহারের প্রতিজ্ঞা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে চাই শহীদদের রক্তের উপযুক্ত মর্যাদার বিনিময়ে সমাজ গঠনের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, আত্মপণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শহরে ও গ্রামে তরুণেরা যে যুদ্ধে লিপ্ত, তা বিদেশী দখলদারদের উৎখাত এবং অসাম্য ও সুবিধা ভোগের অবসান ঘটানোর সংগ্রাম। আমাদের আজকের সংগ্রাম সেদিনই সার্থক হবে যেদিন আমরা বঙ্গবন্ধু প্রতিশ্রুত ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো। সমাজের যে ভবিষ্যৎ রূপ আজ বাংলাদেশের জনসাধারণ প্রত্যক্ষ করছেন সেখানে সকলে সমাধিকারের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবন গঠিত হবে এবং উন্নয়ন ও পরিপূর্ণতার সাধারণ লক্ষ্যে উপনীত হবার প্রয়াসে সকলে অংশগ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের সামরিক চক্রের হাত থেকে উদ্ধার করার একমাত্র উপায় হিসাবে বাংলাদেশ থেকে হানাদার সৈন্যদের নিষ্ক্রমণের সকল পথ রুদ্ধ করে দেয়ার কথা বলেন। জলে স্থলে অন্তরীক্ষে শত্রকে আমরা চরম আঘাত হানবো আর তখনই জেনারেল ইয়াহিয়া খান ক্রর সত্যের মুখোমুখি হবেন। জনাব তাজউদ্দীন বক্তৃতায় এশিয়ায় গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কোন কোন পাশ্চাত্য দেশের নিরাসক্তির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মনে হয় মানুষ হিসাবে মানুষের মর্যাদার চাইতে এখানে তাঁরা সরকারের স্থিতিশীলতার গুরুত্ব দেন বেশী, এটা শোচনীয়। কিন্তু ভারতকে অর্থ সাহায্যের বিনিময়ে ংলাদেশের শরণার্থীদের সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্রস্তাব যখন কোন রাষ্ট্র উত্থাপন করেন তখন আমরা শিউরে না উঠে পারি না। এই প্রস্তাবে গণহত্যা ও তার ফলাফলকে নীরবে মেনে নেয়া হয়েছে। পর্বত প্রমাণ অবিচার ও অন্যায়কে বিনাবাক্যে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে গণহত্যা ও তার ব্যাপক বাস্তুত্যাগের পথ প্রশস্ত করা হয়েছে। পাকিস্তানী সন্ত্রাসের ফলে যারা ছিন্নমূল হয়েছেন, তারা অস্থাবর সম্পত্তি নন যে, অর্থের বিনিময়ে তাঁদেরকে হাতবদল করা হবে। সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে নিজ বাসভূমে ফেরার জন্মগত অধিকার তাদের আছে এবং তারা সেখানে সেভাবেই ফিরে আসবেন। আর আমি বলছি যে, তার খুব বেশী দেরী নাই। প্রসঙ্গত জনাব তাজউদ্দীন আমেরিকার কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের এই চরমতম ক্ষণে প্রেসিডেন্ট নিক্সন উপমহাদেশের তথ্য সংগ্রহের জন্যে একটি বিশেষ দল পাঠিয়ে কি উদ্দেশ্য সাধন করতে চান, এই হলো