পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

470 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড “সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের অন্তে গততন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা সমাজতন্ত্রের আদর্শে বলীয়ান হয়ে বিধ্বস্ত ংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য এক নবসংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। নতুন সমাজ ব্যবস্থা, নতুন মূল্যবোধ গড়ে তোলার জন্যে দেশবাসীকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। রচনা করতে হবে পরম্পরাগত ব্যক্তিস্বাতন্ত্র এবং অসৎ বৃত্তিকেন্দ্রিক উচ্চাভিলাষের সমাধি। স্বাধীনতা কেবল নিশান বদলানো নয়। রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা সম্পূর্ণ ভিন্ন ও এর পুনর্মুল্যায়ন করতে হবে। আমাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে এবং সমবেতভাবে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে এক প্রতিফলন ঘটাতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত নিরপেক্ষতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতেই বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঘাতক ইয়াহিয়ার কারাগার থেকে মুক্ত করার জন্য বৃহৎ শক্তিগুলোকে চাপ সৃষ্টি করতে অনুরোধ জানাচ্ছি। ভারত সরকার ও ভারতীয় জনগণের কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি স্বাধীন রাষ্ট্র ভুটানকে”। -খোন্দকার মোশতাক “মুক্তিবাহিনীর বীর তরুণ এবং ভারতীয় মিত্র বাহিনীর জওয়ানদের বীরত্বে আমরা অভিভূত। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত সরকার এবং ভারতীয় জনগণ আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের কৃতজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আমরা সোভিয়েট রাশিয়া, পোল্যাণ্ড এবং অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাছেও কৃতজ্ঞ।” -কামরুজামান “বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের কাজে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি গড়ে তুলতেই আমরা আত্মনিয়োগ কবর।” -মনসুর আলী “ঢাকা এখন একটি স্বাধীন দেশের রাজধানী। বিজয়ের এই মুহুর্তে বাংলাদেশের জনগণকে আমরা অভিনন্দন জানাই। জয়ধ্বনি দিই মুক্তিবাহিনীর তরুণ বীরদের শৌর্য ও নিবেদিত চিত্ততার জন্যে। বাংলাদেশের জনগণ এবং মুক্তিবাহিনীকে সহায়তা করা; সন্ত্রাসের রাজত্ব থেকে তাঁদের দেশকে রক্ষা করাই ছিল ভারতের উদ্দেশ্য। প্রয়োজনের বেশী সময় আমাদের বাহিনী বাংলাদেশে থাকবে না। আমরা আশা করি এবং প্রার্থনা করি, নতুন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের মধ্যে তাঁর যথাযোগ্য অভিনন্দন গ্রহণ করবেন এবং শান্তি, প্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আমরা বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানাই, সোনার বাংলায় তাদের জন্যে যেন সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে। এ-জয় তাঁদের একার নয়, যে সব জাতি মানবতার মূল্য দেয় তাদের সকলের জন্যে এ-জয় অশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।”