পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৫১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

479 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ১৬০। জেনারেল নিয়াজীর সীমান্ত পরিদর্শন দৈনিক পাকিস্তান ৯ জুলাই, ১৯৭১ গোটা সিলেট জেলা থেকে দুষ্কৃতকারীদের ইষ্টাৰ্ণ কম্যাণ্ডের লেঃ জেঃ এ, এ, কে, নিয়াজী গতকাল বৃহস্পতিবার সেলেট এলাকা সফরকালে উত্তর তিনি জিওসি সমভিব্যহারে এই সফরে যান বলে এপিপির খবরে প্রকাশ । সীমান্ত যাতে আর কোন রকম অনুপ্রবেশ না ঘটে বা কোন রকম হামলা না চলে তারই জন্যে এই সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্ত ঘাঁটিগুলি সবই সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জেনারেল নিয়াজী সৈন্যদের সাথে ঘরোয়াভাবে কথাবার্তা বলেন এবং তাদের কুশল জানতে চান । তিনি তাদেরকে অত্যন্ত ভালো অবস্থায় দেখতে পান। স্থানীয় কমাণ্ডার জেঃ নিয়াজীকে জানান যে, বেসামরিক জনসাধারণের সক্রিয় সহযোগিতায় সারা সিলেট জেলা থেকেই গোলাযোগ সৃষ্টিকারীদের বিতাড়িত করা হয়েছে । কমাণ্ডার জানান, ভারতে ট্রেনিংপ্রাপ্ত কিছু দুস্কৃতিকারী মাঝে মাঝে সীমান্ত পথে ভিতরে ঢুকে প্রধানতঃ আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদেরকে যথোপযুক্ত শিক্ষা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে দুস্কৃতিকারীরা যে নাশকতামূলক তৎপরতা চালাবার চেষ্টা করে স্থানীয় জনসাধারণ ও রাজাকাররা অত্যন্ত সাফল্যের সাথে তা প্রতিহত করে বলে কম্যাণ্ডার জানান । জেনারেল নিয়াজী সিলেট থেকে হেলিকপ্টারে জৈয়ন্তপুর যান এবং সেখানে তিনি সংবর্ধনা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তাঁকে জানানো হয় যে ৭ হাজার গৃহত্যাগী মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে এখানে ফিরে এসেছে। এদের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরও ১২শ লোক রয়েছে । অনুমোদিত পথে ফিরে আসার ব্যাপারে ভারত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় এদের বেশির ভাগই অননুমোদিত পথে পাকিস্তানে ফিরেছে। সংবর্ধনা কেন্দ্রের কাছে দরবান্তপুরে এক বিরাট জনতা নারায়ে তকবির, আলাহু আকবর, পাকিস্তান পায়েন্দাবাদ ও কায়েদে আজম জিন্দাবাদ ধ্বনি দিয়ে জেঃ নিয়াজীকে স্বাগত জানায় । এরপর জেঃ নিয়াজী শ্রীমঙ্গল এলাকায় কুশিয়ারা নদীতে শেওলামুখ ফেরী পরিদর্শন করেন। শ্রীমঙ্গলে স্থানীয় কম্যাণ্ডার জেনারেল নিয়াজীকে জানান যে এই এলাকায় চা বাগানগুলিতে কোন রকম বল প্রয়োগের হুমকি প্রদর্শন করা হয়নি। তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারীরা অবশ্য চা বাগানগুলির দক্ষ শ্রমিকদের ভীত সস্ত্রস্ত করে তুলে তাদেরকে কাজ থেকে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করে। এই দুষ্কৃতকারীরা স্বভাবতই ভারতের ট্রেনিং শিবির থেকে এসেছিলো। ভারত তদের সীমান্তে এই সব শিবির স্থাপন করেছে। সীমান্ত এলাকায় যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভারতীয় বিস্ফোরক দ্রব্যাদি পাওয়া গেছে সেগুলিও জেনারেল নিয়াজীকে দেখানো হয় ।