পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)のデ বাংলায় ভ্রমণ ينجح مضيحصصص--- দাঁইহাট পূবেৰ্ব একটি বিখ্যাত বন্দর ছিল। এখনও এই স্থানে পিতল ও কাসার বাসন এবং উত্তম তসরের কাপড় প্রস্তুত হইয়া থাকে। এখানকার ভাস্করগণ এখনও সুন্দর সুন্দর পাথরের দেবমূৰ্ত্তি নিৰ্মাণ করিয়া থাকেন। এখানে একটি মিউনিসিপ্যালিটি আছে। দাইহাটের নিকটবর্তী নলাহাটি গ্রামে প্রসিদ্ধ পণ্ডিত রুদ্ররাম তর্কবাগীশ নবদ্বীপ হইতে আসিয়৷ বাস স্থাপন করেন। তাহার সংস্কৃত গ্রন্থ " বৈশেষিক শাস্ত্রীয় পদার্থ নিৰূপণ ” ও রৌদ্রী” নামক টীকা গুলি প্রসিদ্ধ। দাঁইহাট হইতে প্রায় দুই মাইল উত্তর-পূবেৰ্ব ভাগীরথীর পূবর্বপারে নদীয়া জেলার মেটেরী গ্রামের রামমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এক খানি রামায়ণ রচনা করেন। ইহা ১৮৩৮ খৃষ্টাব্দে সমাপ্ত হয়। কাটোয় জংশন—ব্যাণ্ডেল জংশন হইতে ৬৫ মাইল দূর। ইহা বৰ্দ্ধমান জেলার অন্যতম মহকুমা। শহরটি ভাগীরথীর সহিত অজয়নদের সঙ্গমস্থলে অবস্থিত। মুসলমান আমলে কাটোয় একটি বিখ্যাত বন্দর ছিল এবং শাসন কার্য্যের সুবিধার জন্য এখানে একটি দুর্গ নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। এই দুর্গের অনতিদূরে নবাব আলিবর্দী খাঁ ১৭৪২ খৃষ্টাব্দে ভাস্কর পণ্ডিত পরিচালিত মহারাষ্ট্ৰীয়দিগকে পরাজিত করিয়াছিলেন। কিছুদিন এই দুর্গ মহারাষ্ট্ৰীয় দিগের অধিকারে ছিল। পলাশীর যুদ্ধের অব্যবহিত পূবেৰ্ব ক্লাইভ এই দুর্গ অধিকার করিয়া তথায় ইংরেজ সৈন্যের সমাবেশ করেন এবং এখান হইতেই তিনি সিরাজউদৌলার সহিত যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হন। এই দুর্গের ভগ্নাবশেষ এখন লোকালয়ে পরিণত হইয়াছে। কাটোয়ায় মুর্শিদকুলী খাঁ কর্তৃক নিৰ্ম্মিত একটি বড় মসজিদৃ আছে। কাটোয় একটি প্রসিদ্ধ বৈষ্ণব তীৰ্থ । শ্রীচৈতন্যদেব এই স্থানে দণ্ডী কেশব ভারতীর নিকট সন্ন্যাস দীক্ষা গ্রহণ করেন। বৈষ্ণব সাহিত্যের স্থানে স্থানে কাটোয়া “ কনটকনগর ” নামে উল্লিখিত হইয়াছে। এখানে দাস গদাধর নামক চৈতন্যদেবের একজন অন্তরঙ্গ ভক্তের পাট অবস্থিত । কাটোয়া হইতে ২ মাইল দূরে ঝামটপুর গ্রামে সুপ্রসিদ্ধ “চৈতন্যচরিতামৃত”-কার কৃষ্ণদাস কবিরাজের শ্রীপটি। অনুমান ১৫১৭ খৃষ্টাব্দে তিনি এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চিরকাল অবিবাহিত ছিলেন। কথিত আছে, নিত্যানন্দের নিকট হইতে স্বপ্রাদেশ পাইয়া তিনি বৃন্দাবনে গমন করেন এবং তথায় বাংলায় “অদ্বৈত সূত্রকড়চা ” “স্বরূপ বর্ণন,” “রাগময়ী কণ৷” প্রভৃতি গ্রন্থ ও সংস্কৃতে “গোবিন্দ লীলামৃত” ও “কৃষ্ণকণামৃতের ” টকা প্রভৃতি রচনা করেন। বৃন্দাবন দাস কৃত প্রামাণিক গ্রন্থ “চৈতন্য-ভাগবতে “ শ্রীচৈতন্যদেবের অস্ত্যলীলা বিস্তারিত নাথাকায় বৃন্দাবনের শ্রদ্ধেয় বৈষ্ণবাচার্য্যগণ কর্তৃক অনুরুদ্ধ হইয়া ৮০ বৎসর বয়সে আরম্ভ করিয়া ৯ বৎসর অক্লান্ত পরিশ্রম করিয়া কৃষ্ণদাস ১৬১৫ খৃষ্টাব্দে তাহার বিরাট গ্রন্থ “চৈতন্য চরিতামৃত” শেষ করেন। এই গ্রন্থে ১২০৫১টি শ্লোক আছে। গ্রন্থ শেষ হইলে জীব গোস্বামী প্রভূতি প্রধান প্রধান বৈষ্ণবাচার্য্যগণ ইহা অনুমোদন করিলে কৃষ্ণদাসের নিজ হস্ত লিখিত পুথি শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য প্রুভূতির তত্বাবধানে গৌড়ে প্রেরিত হয়। পথে বন বিষ্ণুপুরে বীরহান্ধীরের লোক কর্তৃক উহা অপহৃত হয় ; এই সংবাদ পাইয়া বৃদ্ধ কৃষ্ণদাস বৃন্দাবনে শোকে ও হতাশায় মুচিছত হইয়া পড়েন এবং তদবস্থাতেই প্রাণত্যাগ করেন। বাংলা-নাগপুর রেলপথের বিষ্ণুপুর স্টেশন দ্রষ্টব্য।